ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মী অপহৃত হয়েছেন খাস কলকাতায়। এই খবরে তোলপাড় হয়ে যায় গোটা শহর। তার মধ্যে আবার মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে ফোন করে নিজের অপহরণের খবরও দিলেন ওই ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মচারী। তাতে আরও আলোড়ন পড়ে যায়। এই খবর পেয়ে তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করতে নামে লালবাজারের পুলিশ। এমনকী তাঁকে উদ্ধার করে কিনারাও করে অপহরণের রহস্যের। গোটা ঘটনা জানতে পেরে মাথায় হাত পড়েছে পুলিশ কর্তাদের। এমনও যে ঘটতে পারে সেটা কল্পনাও করতে পারেননি পুলিশ কর্তারা।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? পুলিশ সূত্রে খবর, হঠাৎ বেশ কিছু টাকার প্রয়োজন হয় ওই সেনাবাহিনীর কর্মী যুবকের। সেই টাকা হাতাতে নিজেই নিজের অপহরণের গল্প ফেঁদেছিলেন সেনাবাহিনীর কর্মী। তাই তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ফোন করে পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় করার ছক কষেছিলেন ওই সেনাকর্মী। কিন্তু তাঁর পরিবার পুলিশে খবর দেন। সেই খবর পেয়ে তদন্তে নেমে তাঁকে উদ্ধার করে কলকাতা পুলিশ। অভিযুক্তকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাতে প্রমাণ থাকে।
কে এই সেনাকর্মী? পরিচয় কী? লালবাজার সূত্রে খবর, অভিযুক্ত সেনাকর্মীর নাম অরুণ গুলেরিয়া। তিনি অরুণাচল প্রদেশের ২০ শিখ রেজিমেন্টে সেনাবাহিনীর কর্মী। সেখানে তিনি রাঁধুনি হিসাবে কর্মরত। গত ১২ অগস্ট শারীরিক পরীক্ষার জন্য অরুণ কলকাতার কমান্ড হাসপাতালে আসেন। তারপর সেখান থেকে তিনি বেরিয়ে পড়েন। আলিপুরের কমান্ড হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে নিজেই সটান নিউ মার্কেটে চলে যান। সেখানে একটি হোটেলে নিজের পরিচয় দিয়ে ভাড়া থাকতে শুরু করেন। আর সেখানে বসেই এই অপহরণের গল্প ফেঁদে পরিবারকে ফোন করেন। পরিবারের সদস্যরা ভয় পেয়ে লালবাজারে যোগাযোগ করেন।
আরও পড়ুন: স্ত্রীকে গুলি করে খুন, থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করল স্বামী, আলোড়ন নারায়ণপুরে
কেমন করে উদ্ধার করল পুলিশ? এই খবর পেয়ে তদন্তে নেমে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ করে লালবাজার। তার মধ্যে একটা হল মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক। তাতে অনেকটা পরিষ্কার হয়ে যায় বিষয়টি। তারপর ওই এলাকার হোটেলে গিয়ে পৌঁছলে রেজিস্ট্রারে নাম দেখতে পান পুলিশ কর্তারা। রবিবার লালবাজারের অপরাধদমন শাখায় অপহরণের অভিযোগ জমা পড়ে। তারপরই তদন্তে নেমে নিউ মার্কেটের হোটেল থেকে সেনাকর্মীকে উদ্ধার করেন। তিনি তখন মত্ত অবস্থায় ছিলেন বলে লালবাজার সূত্রে খবর। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পুলিশ জেনে যায়, তিনি নিজেই পরিবারের সদস্যদের অপহরণের গল্প বলেছিলেন এবং ৪০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন। অভিযুক্ত সেনাকর্মীকে সেনা কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হবে।