নদিয়ার রানাঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা একের পর এক অভিযোগ খণ্ডন করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোমবার সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, মতুয়াদের পাশে রয়েছে বিজেপিই। ভোটের আগে দলের ভাঙনে ক্ষেপে গিয়ে অসংলগ্ন কথা বলছেন মমতা।
এদিন মতুয়া নাগরিকত্ব প্রসঙ্গে মমতার অভিযোগ উড়িয়ে দিলীপ বলেন, ‘মতুয়াদের জন্য উনি কী করেছেন না করেছেন তা বাংলার মানুষ জানে। যে মতুয়া সমাজ আমাদের MP দিয়েছে আমরা CAA পাশ করিয়েছি। নাগরিকত্ব আমরাই দেবো। যে দেশে নাগরিকের সম্মান পাননি মানুষ। মতুয়াদের উদ্বাস্তু, ভোটার করে রাখা হয়েছে। ওনারা তো একবারও বলেননি নাগরিকত্ব দেবো। কেন দেননি? বিজেপি বলেছে, বিজেপি করেছে’।
দিলীপের প্রশ্ন, ‘উনি কি জানেন কত জনের বিরুদ্ধে দেশবিরোধীতার মামলা চলছে? যারা বেআইনি ভাবে ঢুকেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কেস চলছে। এরকম বহু মানুষ রয়েছেন। উনি মানুষকে আশ্বাস দিয়ে ১০ বছর কাটিয়ে দিলেন। এবার ওনাকে পরীক্ষা দিতে হবে’।
বিজেপিকে ভারতীয় জাঙ্ক (আবর্জনা) পর্টি বলায় পালটা মমতাকে আক্রমণ করেন দিলীপ। তিনি বলেন, ‘ওর গলার আওয়াজ শুনে মনে হচ্ছে উনি হতাশ হয়ে পড়েছেন। আমরা বলি ক্ষেপে গেছেন। যেভাবে পার্টির পুরনো লোকেরা চলে যাচ্ছে.... MLA, MP, মন্ত্রীরা চলে যাচ্ছে… আর যে ভাবে সাধারণ মানুষ বিজেপির কর্মসূচিতে ঝাঁপিয়ে পড়ছে দুটোই ওনার পক্ষে খুন নেগেটিভ যাচ্ছে। সেজন্য হতাশায় অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছেন। উনি যা বলেছিলেন লোকসভা ভোটে মানুষ তার যোগ্য জবাব দিয়েছেন। বিধানসভা নির্বাচনে বাকিটা দেখা যাবে’।
বিজেপির বিরুদ্ধে কৃষকের ঘরে খাওয়ার নামে অভিনয় করার যে অভিযোগ মমতা তুলেছেন তা খারিজ করে দিলীপবাবু বলেন, ‘আমরা কার বাড়িতে যাচ্ছি, কী খাচ্ছি তা তো লুকিয়ে করছি না। ক্যামেরার সামনে করছি। আপনারাও দেখাচ্ছেন। উনি চেয়েছিলেন লোকে ওনাকেও ডাকুক, খাওয়াক। কিন্তু লোকে ওনাকে আর দিদি মনে করে না। তাই ডাকছে না। বাঁকুড়ায় তিন দিন থাকলেন, কেউ ডেকে খাওয়াননি। লোকে হয়তো ওনাকেই ফাইভ স্টারের লোক’।
বিজেপিকে ওয়াশিং মেশিন বলে কটাক্ষ করায় মমতাকে পালটা দিলীপের কটাক্ষ, ‘ভয় দেখানো হলে তো ওনার পার্টি আগেই ভেঙে যেত। আমরা না ভয় দেখিয়েছি, না দেখাবো। আমরা গণতন্ত্র মেনে সংবিধান মেনে রাজনীতি করি। এভাবে সারা দেশে জিতেছি, এখানেও জিতবো। উনি ২০১১ সালে ভোটে জেতার পর পুলিশ দিয়ে ভয় দেখিয়ে পৌরসভা, পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ একটার পর একটা ভেঙে কংগ্রেস – সিপিএমের থেকে নিজের পার্টিতে নিয়েছেন। সেই মানুষগুলো ছিল জোর করে। আজ সুযোগ পেয়ে বেরিয়ে আসছে। কারণ ওই পার্টির মধ্যে গণতন্ত্রহীন হয়ে, অসম্মানজনক জীবন নিয়ে কেউ বাঁচতে চাইছে না’। বিজেপি রাজ্য সভাপতির প্রশ্ন, ‘যে লোকগুলো ওর পার্টির সম্পদ ছিল তারা আজ চোর হয়ে গেল? ওনার এই দ্বিচারিতাও লোকে দেখছে’।