একে একে ৪১টি বছর কেটে গেল। কেউ কথা শুনল না। জেলের কুঠুরিতে বন্দি থাকলেও বিচার হল না বছরের পর বছর। এমনই ঘটনা সামনে এসেছে খোদ পশ্চিমবঙ্গে। বাধ্য হয়ে কলকাতা হাইকোর্টকে উদ্যোগী হয়ে রাজ্য সরকারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ জারি করতে হয়েছে। আর এই নির্দেশ দাঁড়িয়ে আদালতে শুনতে হলেও সরকারপক্ষ কোনও উত্তর দিতে পারেনি।
ঠিক কী ঘটেছে আদালতে? নেপালের এক বাসিন্দাকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তারপর তাঁকে জেলে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ৪১ বছর ধরে তিনি জেলে কাটালেও কোনও বিচার পাননি বলে অভিযোগ ওঠে কলকাতা হাইকোর্টে। এই অভিযোগ বিচারপতির সামনে নিয়ে আসেন স্টেট লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটির আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। আর তাতেই বিচারপতি স্তম্ভিত হয়ে যান। নথিপত্র দেখার পর তিনি নির্দেশ দেন, রাজ্য সরকারকে সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি নেপালের বাসিন্দা দীপক যোশী। ১৯৮০ সালের ১২ মে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। দার্জিলিং জেলা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু তার পর থেকে তিনি কোনও বিচার পাননি। এই বিষয়ে আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘তাঁকে খুনের অভিযোগে ৩০২ ধারায় দ্রেফতার করা হয়েছিল। জেলে থাকতে থাকতে তাঁর মানসিক সমস্যা তৈরি হয়। তাঁকে বিচার প্রক্রিয়ায় আনা হয়নি। কলকাতা হাইকোর্টের নজরে বিষয়টি আনতে এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। এখন তিনি নেপালে নিজের বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে বসবাস করেন। নেপাল দূতাবাসের মাধ্যমে দীপক যোশীকে সেদেশে পাঠানো হয়েছে। দমদমের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের ৭ তারিখে তাঁকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে দীপক যোশীর অ্যাকাউন্টে সেই টাকা পৌঁছে যাবে বলে আদালতের নির্দেশ।