রাজ্যবাসী এই বছর রেকর্ড গরমের সাক্ষী থেকেছে। এখনও প্রবল দাবদাহের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তার মধ্যেই চলছে লোকসভা নির্বাচন। এই আবহে সুখবর পেতে চলেছেন রাজ্যের মন্ত্রী–বিধায়করা। আজ রাত পোহালেই মে মাস। আর এই মাসের শুরু থেকেই বর্ধিত হারে বেতন পাবেন তাঁরা। তবে শুধু নতুন কাঠামোয় বেতনই মিলবে এমন নয়, গত চার মাসের বকেয়া বর্ধিত বেতনও মিলবে। সুতরাং মে মাসের শুরুতে প্রায় ২ লক্ষ টাকার বেশি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে। তবে মাস পয়লায় সেই বেতন বা বকেয়া দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে বিধানসভা সূত্রে খবর।
কেন এমন ঘটতে চলেছে? বিধানসভা সূত্রে খবর, পয়লা মে সরকারি ছুটি। তাই বেতন দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে। নতুন বেতন দেওয়ার কাজ শুরু হবে বৃহস্পতিবার ২ মে থেকে। মাঝে শনিবার এবং রবিবার ছুটির দিন। তাই আগামী সোমবার ৬ মে থেকে এপ্রিল মাসের বেতন পাবেন বিধায়করা। বেতন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যাওয়ার পর কদিনের মধ্যেই বকেয়া বেতন পাঠানো হবে। আর সব মন্ত্রী–বিধায়কের ৪০ হাজার টাকা করে বেতন বেড়েছে। তাই একসঙ্গে এক লক্ষ ৬০ হাজার টাকা বকেয়া বেতন মে মাসেই পাবেন তাঁরা। বিধায়কদের বেতন দেবে বিধানসভা কর্তৃপক্ষ। আর মন্ত্রীদের বেতন দেবে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: আবাস যোজনার টাকা দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে নবান্ন, নয়া পোর্টাল আনা হচ্ছে কাজের জন্য
এদিকে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং বিধায়ক সকলেই বর্ধিত বেতন পাবেন। গত মার্চ মাস পর্যন্ত বিধায়কদের বেতন ছিল প্রত্যেক মাসে ১০ হাজার টাকা। সেটা বেড়ে হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীরা এতদিন পেতেন মাসে ১০ হাজার ৯০০ টাকা। এবার তাঁরা পাবেন ৫০ হাজার ৯০০ টাকা। রাজ্যের পূর্ণমন্ত্রীদের বেতন ছিল ১১ হাজার টাকা। তাঁরা এবার বেতন বাবদ পাবেন ৫১ হাজার টাকা। রাজ্য সরকারের বেতন কাঠামো অনুযায়ী, ভাতা এবং কমিটির বৈঠকে যোগদানের জন্য সব মিলিয়ে রাজ্যের বিধায়করা এতদিন মোট ৮১ হাজার টাকা পেতেন। এবার তাঁদের মোট প্রাপ্য হবে ১ লক্ষ ২১ হাজার টাকা। বিরোধী দলনেতা এবং প্রতিমন্ত্রী, পূর্ণমন্ত্রীরা এবার থেকে পাবেন প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। যা খুশির খবর গরমে।
অন্যদিকে ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বিধানসভার বাদল অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন। নভেম্বর মাস থেকেই বর্ধিত বেতন দিতে উদ্যোগী হয় রাজ্য সরকার। বিল পাশ এবং অনুমোদন নিয়ে বিস্তর দড়ি টানাটানি চলে নবান্ন এবং রাজভবনের মধ্যে। বেতন বৃদ্ধির বিল পাশ করার জন্য দুর্গাপুজোর আবহে একদিনের বিশেষ অধিবেশন ডাকেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ওই বিল বিধানসভায় পেশ করার অনুমতি দেননি রাজ্যপাল। তাই বিল পেশ করানো যায়নি। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে সেই বিলে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস অনুমোদন দেন। সুতরাং নতুন বর্ধিত বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।