মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন বিদেশ সফরে। স্পেনে নিজের সফর শেষ করেছেন এবং এবার যাবেন দুবাইতে। এই আবহে নবান্নে এসে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকার সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এবং মুখ্যসচিব এখন বিদেশ সফরে রয়েছেন। তাই রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবই এখন প্রশাসনের শীর্ষ কর্তা। তিনিই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। কিন্তু বিরোধী দলনেতা সময় চাইলেও মুখ্যমন্ত্রী–মুখ্যসচিবের অনুপস্থিতিতে নবান্নে শুভেন্দুর সঙ্গে দেখা করলেন না বিপি গোপালিকা। তাহলে কি তিনি ভয় পেলেন? এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ঠিক কী লিখেছেন চিঠিতে? নবান্ন সূত্রে খবর, শুভেন্দু অধিকারীকে আজ, বুধবার বিকেলে একটি চিঠি লিখেছেন স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা। সেখানে তিনি পাল্টা আর একটি তারিখ দিয়েছেন বিরোধী দলনেতাকে। সেই তারিখে মুখ্যমন্ত্রী–মুখ্যসচিব রাজ্যে উপস্থিত থাকছেন। এই বিষয়টি নিয়ে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। স্বরাষ্ট্রসচিব চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমি দুঃখিত, আপনার সঙ্গে দেখা করতে পারছি না। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুর ১১টা থেকে ১টার মধ্যে আপনি নবান্নে এসে দেখা করতে পারেন।’ এর বেশি কিছু চিঠিতে লেখা নেই। দুবাইয়ে ২২ সেপ্টেম্বর শিল্প সম্মেলন সেরে ২৩ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরবেন মুখ্যমন্ত্রী–মুখ্যসচিব। আর তখনই বিপি গোপালিকা সময় দিয়েছেন শুভেন্দুকে।
কেন দেখা করলেন না? এখন স্বরাষ্ট্রসচিবের উপর কাজের চাপ আছে এটা ঠিক। কিন্তু সামান্য সময়ও বের করতে পারলেন না! এখানেই অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের অনুপস্থিতিতে বিরোধী নেতার সঙ্গে দেখা করা ভুল বার্তা যেতে পারে। এই কারণেই তিনি দেখা করলেন না বলে অনেকের মত। শুভেন্দু নানা সময়ে দাবি করেছেন, রাজ্য সরকারের মধ্যে তাঁর ঘনিষ্ঠ আমলা কয়েকজন আছেন। তাঁরা তাঁকে খবর দেন। সেখানে যদি এই আবহে স্বরাষ্ট্রসচিব দেখা করতেন তাহলে ভুল বার্তা ছড়িয়ে পড়ত। তাই বিপি গোপালিকা মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে দেখা করার ঝুঁকি নিলেন না বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নিজের বর্ধিত বেতন ডিএ আন্দোলনকারীদের হাতে তুলে দেবেন, শুভেন্দুর নয়া সিদ্ধান্ত
ঠিক কী বলছেন বিরোধী দলনেতা? রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আগে চিঠি দেন দেখা করার আবেদন জানিয়ে। সেখানে তিনি দুটি কারণও উল্লেখ করেন। তবে সেই কারণ দুটি নিয়ে রাজ্য সরকার আগেই বৈঠক করে ব্যবস্থা নিয়েছে। তাই এই বিষয়ে শুভেন্দুর সঙ্গে আলাদা বৈঠক করার যৌক্তিকতা নেই। তবে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘একদিকে ডেঙ্গি অন্যদিকে রাস্তার মারণফাঁদ বাড়ছে। দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যের এই দুটি জ্বলন্ত সমস্যা নিয়ে স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। তাই বারেবারে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু উনি দেখা করেননি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার এই অবস্থা হলে অন্যান্য বিধায়কদের কী অবস্থা সেটা সহজেই বোঝা যাচ্ছে।’