রেলের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অভিযোগ খারিজ করে দিল রেল। তবে আগুন নেভানোর কাজে গিয়ে দমকলকর্মীরা স্ট্র্যান্ড রোডে পূর্ব রেলের নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ের কোনও নকশা পাননি বলে যে অভিযোগ করেছিলেন মমতা, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ জোশী।
সোমবার সন্ধ্যায় ৬ টা ১০ মিনিটে স্ট্র্যান্ড রোডে রেলের অফিসে আগুল লাগে। তা ক্রমশ বিধ্বংসী আকার ধারণ করে। আগুন ঝলসে এবং দমবন্ধ হয়ে মোট ন'জনের মৃত্যু হয়। তারইমধ্যে রাত ১০ টা ১৫ মিনিট নাগাদ দুর্ঘটনাস্থলে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে রেলের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন। তিনি দাবি করেন, রেলের থেকে বিল্ডিংয়ের নকশা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা পাওয়া যায়নি। সেই নকশা পেলে দমকলের কাজে সুবিধা হত বলে জানান। তাঁর কথায়, ‘(এটা) রেলের ভবন। অনেক পুরনো ভবন। এখানে একটা অগ্নিকাণ্ড ঘটে। খুব ভয়াবহ ঘটনা। এই পরিস্থিতিতে রেলের জায়গা। রেলের সবটাই।….এটা কিন্তু রেলের জায়গা। তাদের উপর একটা দায়িত্ব বর্তায়। এমনকী আমাদের দমকল বিভাগ থেকে একটি ম্যাপ চাওয়া হয়েছিল। কারণ কোন বিল্ডিংটা কোন খান দিয়ে কীভাবে ঢুকছে, এটা একটা প্ল্যান থাকলে চটপট ধরা যায়। কিন্তু সেক্ষেত্রেও কোনও সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে আমায় আমার সতীর্থ সুজিত বসু জানালেন। যাই হোক, দুর্ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না।’ সেইসঙ্গে ভবনে যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ছিল না এবং যা ছিল, তা আগুন লাগার পর ঠিকভাবে কাজ করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।
যদিও অসহযোগিতার অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার। সংবাদসংস্থা এএনআইকে তিনি বলেন, 'সেখানে উপস্থিত ছিলেন রেলের আধিকারিকরা। যা কিছু প্রয়োজন ছিল, তা করা হয়েছে।' সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ নিয়ে মুখ না খুললেও সোমবার রাত একটা নাগাদ রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল দাবি করেন, দুর্ঘটনাস্থলে জেনারেল ম্যানেজার-সহ রেলের আধিকারিকরা আছেন। উদ্ধারকাজে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছেন। রাজ্য সরকারকে যাবতীয় সাহায্য করাও হচ্ছে বলে দাবি করেন। তবে নকশা না পাওয়ার যে অভিযোগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার। তিনি বলেন, 'তৎক্ষণাৎ হয়ত নকশা দেওয়া যায়নি। কিন্তু ভবন নিয়ে দমকলকে দিকনির্দেশ দেওয়ার জন্য রেলের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।'