টেলিফিল্মে অভিনয়ের সুযোগ করে দেওয়ার টোপ দেওয়া হয়েছিল। আর সেই টোপ দিয়ে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠল এক পরিচালকের বিরুদ্ধে। তাই নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ওই টেলিফিল্মের পরিচালককে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। স্টুডিয়োয় ডেকে তার অশ্লীল ছবি তোলা হয়। তার পর সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখানো হয়। এমনকী ব্ল্যাকমেল করে ওই ছাত্রীকে স্টুডিও’র মধ্যেই ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।
ঠিক কী ঘটেছে রিজেন্ট পার্কে? স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই ছাত্রীর কাছে একটি টেলিফিল্মে অভিনয় করার প্রস্তাব আসে। তাতে ওই ছাত্রী সাড়া দিলে তাকে রিজেন্ট পার্কের স্টুডিওতে আসতে বলা হয়। প্রথমদিন সে বাবা–মায়ের সঙ্গে যায়। তখনই তার নগ্ন ছবি তোলা হয়। আর এসব পরিবারকে জানালে জীবনে সমস্যা হবে বলে তাকে ভয় দেখানো হয়। এরপর আবার ওই ছাত্রীকে একদিন ওখানে ডাকা হয়। বাধ্য হয়ে ছাত্রীটি সেখানে গেলে তাকে গোটা দুপুর ধরে ধর্ষণ করা হয়। তখন তাকে ব্ল্যাকমেল করা হয়। আর এই নগ্ন ছবি এবং সহবাসের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়া হবে কাউকে জানালে বলে পরিচালক হুমকি দেয়।
তারপর ঠিক কী ঘটল? পরিবার সূত্রে খবর, ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে ছেড়ে দেওয়া হলে রাতে বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। তখনই পুরো ঘটনাটি প্রকাশ্যে চলে আসে। যা শুনে চমকে ওঠেন তার মা–বাবা। তখনই হরিদেবপুর থানার দ্বারস্থ হন নাবালিকার মা। এই ঘটনায় আরও এক যুবক জড়িত বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ দায়েরের পরে হরিদেবপুর থানার পক্ষ থেকে ‘জিরো এফআইআর’ করে সেটি রিজেন্ট পার্ক থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ভাস্কর নামে টেলিফিল্মের এক ক্যামেরাম্যানও এই ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ। সে পলাতক। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে তদন্তকারী পুলিশ।
পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে? পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত পরিচালকের নাম শুভজিৎ চৌধুরী। সে রিজেন্ট পার্ক এলাকার বাসিন্দা। সোমবার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতকে এদিন আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ১৫ মে পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। গ্রেফতার করেছে রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ। তার বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ৬ মে ওই ছাত্রীকে আবার ফোন করে স্টুডিয়োয় ডাকে অভিযুক্ত শুভজিৎ। তার পরে ওই ছাত্রীর নগ্ন ছবি তোলা হয়। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ব্ল্যাকমেল করে ধর্ষণ করা হয়। ঘটনাস্থল রিজেন্ট পার্ক হওয়ায় সেই এফআইআর ও অভিযুক্তকে সেই থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। রিজেন্ট পার্ক থানা এই অভিযোগের তদন্ত চালাবে। খোঁজখবর নিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃত ব্যক্তি একাধিক বি–গ্রেড টেলিফিল্ম তৈরি করেছে। বিভিন্ন হোটেলেও সে নগ্ন ফটোশ্যুট করে।