স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসেই চলত OMR শিটের নম্বর বদল
স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতির পর্দা ফাঁস হয়েছে। যে দুর্নীতি রোখার জন্য ওএমআর শিটে পরীক্ষা নেওয়া শুরু হয়েছিল, সেই ওএমআর শিটের নম্বর নিয়েই কারচুপি হত এসএসসি অফিসেই। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে রিপোর্ট পেশ করে সিবিআই জানিয়েছে, কমিশনের কেন্দ্রীয় অফিস থেকেই দুর্নীতি চলত। সিবিআই জানায়, প্রার্থীদের এই নম্বর বদল কার হাত দিয়ে হয়েছিল, তার তদন্ত চলছে।
সিবিআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ওএমআর শিট স্ক্যান করে নম্বর দেওয়ার দায়িত্ব ছিল বেসরকারি সংস্থা, নাইসা কমিউনিকেশন প্রাইভেট লিমিটেডের। কমিশনকে সেই নম্বর এক্সের শিটে পাঠাত সংস্থাটি। এরপরই সেই এক্সেল শিটে নম্বর বদল করে দেওয়া হত বলে দাবি সিবিআই-এর। রিপোর্ট অনুযায়ী, সব মিলিয়ে ৮,১৩৬ জনের ওএমআর শিটে নম্বর অদলবদল করা হয়েছিল। যদিও বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দলের নবনিযুক্ত সিটের প্রধান অশ্বিন শেনভি দাবি করেছিলেন, অন্তত ২১ হাজার বেআইনি নিয়োগ হয়েছে।
আদালতে প্রতিবেদন পেশ করে সিবিআই জানিয়েছে, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ওএমআর শিট স্ক্যান করতে গাজিয়াবাদের নাইসা কমিউনিকেশন নামে এক সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছিল এসএসসি। বিধাননগরে এসএসসির দফতরে যন্ত্র এনে সমস্ত ওএমআর শিট স্ক্যান করে তারা। তারপর ওএমআর শিটের স্ক্যান করা কপি ও প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর হার্ড ডিস্কে ভরে এসএসসির হাতে তুলে দিয়েছিল তারা। সিবিআই জানিয়েছে, তার পর সেই নম্বর ওয়েবসাইটে আপলোড করে এসএসসি। কিন্তু হার্ড ডিস্কের নম্বর ইচ্ছামতো ফেরবদল করে আপলোড করেন এসএসসির আধিকারিকরা।
সিবিআই জানিয়েছে, গাজিয়াবাদে নাইসা কমিউনিকেশনের আধিকারিক পঙ্কজ বনসলের বাড়িতে তল্লাশি চালায় তারা। সেখান থেকে উদ্ধার হয় ৩টি হার্ড ডিস্ক। সেই হার্ড ডিস্কের তথ্যের সঙ্গে এসএসসির সার্ভারে থাকা তথ্য তুলনা করে দেখা গিয়েছে ওয়েবসাইটে নম্বর আপলোড করার সময় ব্যাপকহারে কারচুপি হয়েছে। সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, কারচুপির যাবতীয় তথ্য ইতিমধ্যে এসএসসির হাতে তুলে দিয়েছে তারা।