যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় জম্মু ও কাশ্মীরের মহম্মদ আরিফ গ্রেফতার হতেই এনআইএ তদন্তের দাবি তুললেন শুভেন্দু অধিকারী। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা দলনেতা শুভেন্দু দাবি করেন, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে আগত পড়ুয়ারা যাদবপুরে ভরতি হতে পারেন না। কিন্তু আরিফের ভুয়ো রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট বানিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজ এর সঙ্গে কাদের লিঙ্ক আছে? মধ্যযুগীয় বর্বরতা কারা করতে পারে? এটা সহজেই আমাদের অনুমেয়।’ যদি সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শুভেন্দুকে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি দাবি করেন, যে কোনও ঘটনায় এরকম 'পাগল' থাকেন। পুলিশ তদন্ত করছে। অথচ পুরো ঘটনাকে সম্পূর্ণ অন্য একটি ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন শুভেন্দু।
আরও পড়ুন: JU student death: যাদবপুর ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার দায়িত্ব পেতে পারেন প্রাক্তন সেনাকর্মীরা
গত সপ্তাহে যাদবপুরের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর পর বুধবার আরও ছ'জনকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। প্রাথমিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী, অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র দীপশেখর দত্ত, সোশিয়োলজি বিভাগের ছাত্র মনোতোষ ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার প্রাক্তনী সপ্তক কামিল্যা, প্রাক্তনী অসিত সর্দার, প্রাক্তনী সুমন নস্কর, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আরিফ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র অঙ্কন সরকার এবং ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আসিফ আফজন আনসারিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সেই গ্রেফতারির পরেই এনআইএ তদন্তের দাবি তোলেন শুভেন্দু। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘যাদবপুরে আমাদের যে ভবিষ্যৎটা চলে গিয়েছে, সেখানেও আমি এনআইয়ের দাবি করব। আজ ধরা পড়েছে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে আসা আজমল বলে একটি ছেলে (আজমল বলে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি, মহম্মদ আসিফ আফজল আনসারি বলে একজন ধরা পড়েছেন, যিনি আদতে পশ্চিম বর্ধমান জেলার উত্তর আসানসোলের বাসিন্দা)। তার সঙ্গে (ধরা পড়েছে) আরিফ বলে আরও একটি ছেলে। এই জম্মু ও কাশ্মীরের ছেলে যাদবপুরে ভরতি হতে পারে না।’
শুভেন্দু আরও বলেন, ‘তাকে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট দিয়েছেন শাসক দলের নেতারা। ওবিসি-এ করে তাকে ভরতির সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। আজ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ এর সঙ্গে কাদের লিঙ্ক আছে? মধ্যযুগীয় বর্বরতা কারা করতে পারে? এটা সহজেই আমাদের অনুমেয়। একে একেবারে শিকড় থেকে তুলে উপড়ে ফেলতে হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
সেই মন্তব্যের পালটা দিয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল। তিনি বলেন, 'সমস্ত ঘটনার মধ্যে মাঝেমধ্যে দু'একটা বদ্ধ পাগল থাকে। ফলে যে কোনও ঘটনার মধ্যে দু'একজন মানসিক বিকৃত, পাগল থাকবে, এ তো খুব স্বাভাবিক বিষয়। এখন প্রশাসন কখন, কীসে, কাকে, কীজন্য দিচ্ছে, সেগুলি তদন্তসাপেক্ষ ব্যাপার। প্রথমেই গোটা বিষয়টাকে অন্যদিকে নিয়ে চলে যাওয়া...এসব বদ্ধ উন্মাদের কারবার।'
রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘যদি ওখানে কারও রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেটের ব্যাপার থাকে, তাহলে সেখানে ইউনিয়নেরও ভূমিকা থাকে। এই ছেলেটা এসেছে, এই সার্টিফিকেটের দরকার। প্রশাসনের ভূমিকা থাকে ওখানে। সেইসব বিষয়গুলি তো দেখছে পুলিশ। পুলিশ তদন্ত করছে। এখানে এনআইএ কী করবে?’