জল্পনাই সত্যি হল। দিল্লি পৌঁছে তৃণমূল ছাড়লেন কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী। শুক্রবার তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদ ত্যাগ করে এক বিবৃতি জারি করেন তিনি। গত ৩ অক্টোবর তৃণমূলের সমস্ত দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিলেও প্রাথমিক সদস্যপদ ত্যাগ করেননি মিহিরবাবু। তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদ ত্যাগ করার পর তাঁর বিজেপিতে যোগদান সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিন তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদে ইস্তফা দেওয়ার পর তাঁর বিবৃতিতে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণা করেছেন মিহিরবাবু। লিখেছেন, কীভাবে সিপিএমের সঙ্গে লড়াই করে প্রথমে কংগ্রেস ও পরে তৃণমূল কংগ্রেসকে কোচবিহারে প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি।
সঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণভাবে লিখেছেন, রাজনীতিতে ছুৎমার্গ বলে কিছু হয় না। বাইশ বছর আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম বাম অপশাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য। সিপিএমকে উৎখাত করার পর আমাদের নেত্রী বিভিন্ন সময়ে নানা দলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। কখনও বিজেপি, কখনও কংগ্রেস, কখনও ফের বিজেপি, ফের কংগ্রেস। পরবর্তীতে জিতে এসে সিপিএমের বহু নেতাকর্মীদের তিনি কাতারে কাতারে দলে নিয়েছেন। অর্থাৎ কোনও দলই তাঁর কাছে অচ্ছুৎ ছিল না। সেই নিয়ম মেনে তৃণমূল ছেড়ে অন্য দলে যোগ দেওয়াতেও ছুৎ-অচ্ছুৎ বলে কিছু থাকে না। সঙ্গে তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, রাজনীতিতে মানুষের সমর্থন থাকলে ছুৎমার্গ বলে কিছু থাকে না।
এদিন চিঠি লিখে দল ছাড়লেন তিনি।
ফের একবার দলের বিরুদ্ধে অবহেলা ও অপমানের অভিযোগে সরব হয়েছেন তিনি। লিখেছেন, বিশেষ করে গত ১০ বছর একনিষ্ঠ কর্মী হিসাবে জেলায় দলের মধ্যে বারবার অবহেলিত – অপমানিত হয়েছি। দলের রাজ্য নেতৃত্ব তাতে নীরব প্রচ্ছন্ন মদত যুগিয়ে গিয়েছেন। দলনেত্রীকে সেসব কতা বারংবার জানিয়েও পরিস্থিতি ইতরবিশেষ হয়নি’।
দলের রাশ আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে নেই বলে এদিন ফের একবার সরব হয়েছেন তিনি। লিখেছেন, ‘আজ সব সহ্যের সীমা অতিক্রম করার পরও দেখছি নেত্রীর একই রকম আশ্চর্য নীরবতা পালন করছেন। সম্ভবত তিরস্কার ও বহিষ্কারের ক্ষমতাও তাঁর লুপ্ত হয়েছে। দলের চালকের সিটে তিনি আর নেই। আজ এই তৃণমূল দলের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও ইস্তফা দিলাম’।
শুক্রবার সকালে বিজেপি সাংসদ নিশীথ অধিকারীর সঙ্গে দিল্লি যান মিহিরবাবু। এর পর বিজেপির সদর দফতরে দেখা যায় তাঁকে। সূত্রের খবর, শুক্রবারই বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন তিনি।