মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবার নিরাপত্তা উপদেষ্টা হচ্ছেন আইপিএস রূপক কুমার দত্ত। সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগের সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই নিরাপত্তা উপদেষ্টা একদিকে কর্নাটক পুলিশের প্রাক্তন ডিজি ছিলেন। আবার প্রাক্তন সিবিআই কর্তা হিসাবেও বেশ পরিচিত। দুঁদে এই অফিসারকে এবার নিয়োগ করা হল। রূপক কুমার দত্ত নামটার সঙ্গে সিবিআই–ইডি অত্যন্ত পরিচিত। সিবিআই–ইডি কর্তারা জানেন এই রূপক কুমার দত্ত নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ হলেও তাঁর পরামর্শ কেন্দ্রীয় দুই সংস্থাকে বেশ চাপে ফেলে দিতে পারে।
এদিকে বারবার মুখ্যমন্ত্রীর উপর হামলার ছক করা হয়েছে। কখনও বাড়ির পাঁচিল টপকে সারারাত ঘাপটি মেরে ছিল এক ব্যক্তি। আবার কখনও ভুয়ো বিএসএফ কর্তার পরিচয় দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে প্রবেশের চেষ্টা দেখেছে রাজ্যবাসী। সুতরাং বারবার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এবার ১৯৮১ সালের ব্যাচের আইপিএস রূপক কুমার দত্তকে নিয়োগ করা হল। যিনি ছিলেন সিবিআই স্পেশ্যাল ডিরেক্টর। কর্নাটক পুলিশের ডিজি। তাঁকেই এবার মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা করা হল। সীমান্তবর্তী অঞ্চলের নিরাপত্তা ও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে পরামর্শ দেবেন তিনি।
অন্যদিকে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে রূপক কুমার দত্তের নাম প্রস্তাব করে রাজ্যের পক্ষ থেকে রাজভবনে পাঠানো হয়। তারপর মে মাসে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সেই প্রস্তাবে সায় দেন। আর জুলাই মাসের ২৪ তারিখ সেটাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ একেবারে নিয়ম মেনেই এই প্রাক্তন পুলিশ কর্তা মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ হলেন। তবে এই নিয়োগ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন প্রশাসনের সকলেই। সিবিআই অফিসার হিসাবে দায়িত্ব সামলেছেন প্রায় ১৮ বছর। টুজি স্পেকট্রাম, অগাস্তা ওয়েস্টল্যান্ড সংক্রান্ত নানা গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।
আরও পড়ুন: ভুয়ো ভিডিয়ো ছড়াতে পারে বিজেপি, মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রীদের সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী
আর কী জানা যাচ্ছে? কর্নাটক পুলিশের ডিজি হিসাবে দায়িত্ব পাওয়ার পর এই রূপক কুমার দত্ত সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন। যা নিয়ে গোটা দেশে আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল। সূত্রের খবর, তিনি যে সমালোচনা করেছিলেন তার নেপথ্যে একটা কারণ ছিল। সিবিআই ডিরেক্টর পদের যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে তা হতে দেওয়া হয়নি। তখন তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘যেভাবে সিবিআই একাধিক কেসে তদন্ত করছে, তাতে এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা অচিরেই ভেঙে পড়তে পারে।’ আর আজ গোটা দেশজুড়ে সিবিআই–ইডি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এমনকী দেশের বিরোধীরা একজোট হয়ে পড়েছে।