সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যে মাদক পাচার বেড়েছে। গত কয়েকমাস ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে নিষিদ্ধ মাদক উদ্ধার করার পাশাপাশি একাধিক পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গেকে সেফ করিডর হিসেবে ব্যবহার করছে মাদক পাচারকারীরা। আর সেই রাস্তা ধরেই ভিন রাজ্য থেকে এমনকী বিদেশ থেকেও মাদক পৌঁছে যাচ্ছে গোটা বঙ্গে। এই অবস্থায় মাদক পাচার রুখতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করতে চলেছে রাজ্য পুলিশ। এর জন্য অ্যান্টি নার্কোটিস টাস্ক ফোর্স (এএনটিএফ) গঠন করতে চাইছে রাজ্য পুলিশ। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে নবান্নের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে নবান্নের সবুজ সংকেত মিললেই অ্যান্টি নার্কোটিস টাস্ক ফোর্স গঠন হবে।
আরও পড়ুন: ছাগলের ব্যবসার আড়ালে বড়সড় মাদকের চক্র, গাইঘাটার দম্পতির কীর্তিতে চাঞ্চল্য
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যান্টি নার্কোটিস টাস্ক ফোর্স কাজ করবে স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) অধীনে। মাদক পাচার সংক্রান্ত খবর পেলেই পদক্ষেপ করবে এই বিশেষ বাহিনী। এনসিবির মতোই কাজ করবে এই বাহিনী। সে ক্ষেত্রে মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর পাশাপাশি মাদক সংক্রান্ত তথ্যও সংগ্রহ করবে তারা। কীভাবে এই বাহিনী গঠন করা হবে সে বিষয়ে নবান্নের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে রাজ্য পুলিশ। সে ক্ষেত্রে একজন পুলিশ সুপারের অধীনে এই টাস্ক কোর্স কাজ করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁর অধীনে থাকবেন দুজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ২ ডিএসপি, ২ ইনসপেক্টর, ১৬ জন সাব ইনসপেক্টর ও ১২০ জন কনস্টেবলকে নিয়ে এই টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হবে। তাঁদের বিভিন্ন জেলায় মাদক-বিরোধী অভিযানে পাঠানো হবে।
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে গত কয়েক মাসে বিপুল পরিমাণে মাদক উদ্ধার করেছে স্পেশাল ট্রাস্ট কোর্স। তদন্তকারীদের দাবি, শিলিগুড়ি, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার, মালদহ হয়ে মাদক পাচারকারীরা গোটা বাংলায় মাদক ছড়িয়ে দিচ্ছে। বিশেষ করে হেরোইন, ব্রাউন সুগারের মতো নিষিদ্ধ মাদক দেশের উত্তর পূর্ব রাজ্যগুলি থেকে আসছে। এমনকী মায়ানমার থেকেও ওই পথে গোটা বাংলায় মাদক পৌঁছে যাচ্ছে। এছাড়াও, মাদক তৈরির কাঁচামাল পৌঁছে যাচ্ছে বাংলায়। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, বর্ধমান সহ বিভিন্ন জেলাকে ব্যবহার করছে মাদকের কারবারিরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মাদক সংক্রান্ত ২৭টি মামলা রুজু করেছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। সবমিলিয়ে ৩০ কোটি টাকা নিষিদ্ধ মাদক উদ্ধার হয়েছে। অন্যদিকে, ২০২২ সালে মাত্র ৮ থেকে ৯ কোটি টাকার মাদক উদ্ধার হয়েছিল। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে অনুমান করা যাচ্ছে চলতি বছরে মাদকের কারবার রাজ্যে কতটা বেড়েছে!