হাতে আর কয়েকটা মাস। তার পরই বিধানসভা নির্বাচন। আর ভোট যত এগোচ্ছে ততই জোর পাচ্ছে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা। বিভিন্ন সময় ভাসছে বিভিন্ন খবর। তাতে মাঝেমাঝেই ইন্ধন দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা। উলটো দিকে সাবধানী তৃণমূল। ওদিকে সুকৌশলে দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন শুভেন্দু। কিন্তু কেন আটকে রয়েছে শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগদান। সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তার আভাস দিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়। কী বলেছেন তিনি?
বিজেপি সূত্রের খবর, ২০২১-সালের নির্বাচনের আগে শুভেন্দুকে দলে পেতে মরিয়া তাঁরা। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নায়ক, মেদিনীপুরের বেতাজ বাদশা শুভেন্দুকে দলে টানতে পারলে তৃণমূল যে ছারখার হয়ে যাবে তা অস্বীকার করতে পারবেন না শাসক দলের নেতারাও। আর আজ না-হোক কাল, শুভেন্দুকে তৃণমূল ছাড়তেই হবে। কারণ তিনিও বিলক্ষণ বুঝেছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে বেশি গুরুত্ব তাঁকে দেবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাহলে কোথায় আটকে শুভেন্দুর যোগদান?
শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে এসে (পড়ুন তৃণমূল ভেঙে) নতুন দল গড়তে চান শুভেন্দু। সেই দল গোটা পশ্চিমবঙ্গে ছড়িয়ে দিতে চান তিনি। তার পর মুখোমুখি লড়াই করতে চান তৃণমূলের সঙ্গে। সেক্ষেত্রে বিজেপির সঙ্গে জোট করতে পারেন তিনি। কিন্তু এই শর্তে রাজি নয় বিজেপি।
একই ঘটনা ঘটেছিল মুকুল রায়ের তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে আসার সময়ও। জাতীয়তাবাদী তৃণমূল কংগ্রেস নামে দল গড়েছিলেন মুকুল অনুগামীরা। তাতে যোগদানের কথা ছিল মুকুলের। সেই দল বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছিল। যে প্রস্তাব মানেনি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ফলে বেশ কয়েকমাস রাজনীতি থেকে দূরে থাকার পর সরাসরি বিজেপিতে যোগদান করতে হয় মুকুল রায়কে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, এই মুহূর্তে সেই পর্ব চলছে শুভেন্দুর। একদিকে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি, অন্যদিকে নিজের দল গঠনের প্রস্তুতি। যা নিয়ে চরম তৎপর শুভেন্দুর অনুগামীরা।
যদিও মুকুল রায়ের দাবি, শুভেন্দু আলাদা দল করলে বিজেপির কোনও লাভ নেই। কারণ তাতে তৃণমূলের ভোট বিজেপির দিকে আসার বদলে শুভেন্দুর দিকে যাবে। একই ভাবে বিজেপিরও কিছু ভোট পাবেন শুভেন্দু। যার ফলে আখেরে বিজেপির তেমন কোনও লাভ হবে না।
কিন্তু শুভেন্দু নিজে কী বলছেন? সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারীকে মুখ খুলতে দেখা যায়নি। একাধিক দলীয় ও সরকারি অনুষ্ঠানে গরহাজির ছিলেন তিনি। যার জেরে দলের তরফে তাঁকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাতে সরকারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে।