সম্প্রতি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে হার্দিক পান্ডিয়ার সৎ ভাই বৈভব পান্ডিয়া। ইতিমধ্যেই তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। আর্থিক দুর্নীতিকাণ্ডে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত তাকে আপাতত পুলিশর হেফাজতে থাকতে হবে। মুম্বই পুলিশের আর্থিক দুর্নীতি শাখা তাঁকে গ্রেফতার করে। প্রায় চার কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠেছে বৈভবের বিরুদ্ধে। সোমবারই তাকে আটক করা হয়েছিল। যদিও তার আইনজীবীদের দাবি বিষয়টি একান্তই পারিবারিক। আর যে ঘটনা ঘটেছে সেটা ভুল বোঝাবুঝির জন্য।
শুক্রবার দিনই তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়। পুলিশের হেফাজতের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় তাঁকে পেশ করা হয় আদালতে। সেই সময়ই বৈভবের পক্ষের আইনজীবী দাবি করেন বিষয়টি একান্তই ভুলবোঝাবুঝির জেরে এতদুর পর্যন্ত এসেছে। পারিবারিক সূত্রে ইতিমধ্যেই বিষয়টি মিটমাট করে নেওয়ার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়ে আইনজীবীর পক্ষ থেকে। মূলত হার্দিক এবং ক্রুণালকে ঠকিয়েছে তাঁর ভাই বৈভব, এই অভিযোগই সামনে এসেছে। তিনজন একসঙ্গে ব্যবসা শুরু করলেও পরবর্তীতে দেখা যায় হার্দিকদের ব্যবসায় ক্ষতি অথচ তার সৎ ভাই কম টাকা ঢেলেও একই ব্যবসা থেকে মোটা অঙ্কের লাভের মুখ দেখেছেন। তাতে সন্দেহ হয় পান্ডিয়া ব্রাদার্সদের।
আরও পড়ুন- IPL 2024- ভারতীয় দল থেকে বিরতিটা দরকার ছিল, বিতর্কিত অধ্যায় নিয়ে মুখ খুললেন ইশান
বৈভবের আইনজীবী নিরঞ্জন জানিয়েছে, তদন্তে সবরকমের সহযোগিতা করছেন বৈভব। পুলিশের হেফাজতে যেতে বৈভবের কোনও সমস্যা নেই। আরও সাত দিনের জন্য বৈভবকে হেফাজতে চেয়েছিল মুম্বই পুলিশের আর্থিক জালিয়াতি শাখা বা EOW। তাঁদের বক্তব্য ছিল, সম্পূর্ণ তদন্ত শেষ হয়নি। ফলে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই বৈভবকে হেফাজতে রাখা প্রয়োজন। আদালত দুই পক্ষের কথা শোনার পরই বুঝতে পারে যে এই তদন্তে আরও সময় প্রয়োজন। কারণ একাধিক আর্থিক প্রতারণা ও দুর্নীতি রয়েছে এই মামলায়। ফলে তদন্তকারী সংস্থাকে আরও সময় দেয় আদালত।
আরও পড়ুন-IPL 2024-শূন্যের লজ্জার রেকর্ড ম্যাক্সওয়েলের, ধরে ফেললেন রোহিত-কার্তিককে
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে হার্দিক পান্ডিয়া এবং তার দাদা ক্রুণাল পান্ডিয়ার সঙ্গে পলিমারের ব্যবসা শুরু করে বৈভব। ২০২১ সালে মুম্বইতে এই যৌথ ব্যবসা শুরু করেন তাঁরা। হার্দিক এবং ক্রুণাল, ব্যবসার মোট ৮০ শতাংশ অর্থ ব্যয় করে। বাকি ২০ শতাংশ টাকা দেন বৈভব। সেই মতোই ব্যবসা থেকে লাভ বা ক্ষতিরও শতাংশের নিরিখেই সমবন্টন হবে বলে ঠিক করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যায় হার্দিক এবং ক্রুণালের প্রায় ৩ কোটি টাকা ক্ষতি হলেও বৈভবের লাভ প্রায় ২০-৩৩ শতাংশ বেড়ে যায়। এরপরই ভাইদের মধ্যে শুরু হয় অশান্তি। জানা যায়,হার্দিক এবং ক্রুণালকে না জানিয়েই একইরকম দ্বিতীয় ব্যবসা অনত্র চালু করেছিলেন বৈভব। হার্দিকের ব্যবসার দৈনন্দিন কাজ সামলাতেন বৈভব নিজেই। ফলে দ্বিতীয় ব্যবসার কথা বাকিরা কেউই জানতে পারেনি। কিন্তু নিজেদের ক্ষতি অথচ সৎ ভাইয়ের লাভ দেখেই সন্দেহ হয় পান্ডিয়াদের।
আরও পড়ুন- IPL 2024-দর্শকরা যত বিদ্রুপ করবে ভালো খেললে ততই…হার্দিকের জন্য যুক্তি সাজালেন ইশান
হার্দিক পান্ডিয়া এবং ক্রুণাল পান্ডিয়াদের ব্যবসা থেকেও প্রায় ১ কোটি টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে নিয়েছেন বৈভব, এমন দাবি করা হয়। যার জেরে দুই ক্রিকেটারের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ কোটি টাকা। এরপরই হার্দিকরা পুলিশের দ্বারস্থ হলে বৈভবকে গ্রেফতার করা হয়। বোঝাই যাচ্ছে, বিষয়টি পরিবারের মধ্যে মিটিয়ে না নিতে পারলে, শ্রীঘর থেকে খুব তাড়াতাড়ি বেরোনো হবে না পান্ডিয়াদের সৎ ভাইকে।