দুই দিন আগেই জোট হয়েছে। অসমে বিজেপিকে রোখার জন্য বদরুদ্দিন আজমলের All India United Democratic Front (AIUDF) সহ পাঁচটি দলের সঙ্গে মহাজোট করেছে কংগ্রেস। এর মধ্যেই উস্কানিমূলক মন্তব্য করে বিতর্ক সৃষ্টি করলেন আজমল। যা নিয়ে রীতিমত অস্বস্তিতে জোটসঙ্গী কংগ্রেস। আসন্ন ভোটে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের জন্যেই আজমল এরকম কথা বলছেন বলে দাবি শাসকের।
ধুবড়ির সাংসদ বদরুদ্দিন আজমল নিজের সংসদীয় অঞ্চলের গৌরীপুরে একটি জনসভায় উস্কানিমূলক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন যে বিজেপি হল দেশের শত্রু, মহিলাদের জন্য বিপদ। তাঁর দাবি যে বিজেপি ৩৫০০ মসজিদের তালিকা তৈরি করেছে। যদি ফের কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসে তারা, তাহলে ওই মসজিদগুলিকে ভেঙে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন যে রাজ্যে যদি ফের বিজেপি আসে তাহলে বোরখা পরিহিত মহিলাদের বেরোতে দেওয়া হবে না, মসজিদে আজান দিতে দেবে না। এরকম ভাবে কি মানুষ বেঁচে থাকতে চায়, তিনি প্রশ্ন করেন। কোন ভিত্তিতে তিনি এইসব দাবি করছেন, সেটা অবশ্য বলেননি আজমল।
২০০৫ সালে সুগন্ধীর ব্যবসায়ী বদরুদ্দিন আজমল এই রাজনৈতিক দলটি গঠন করেন। পূর্ববঙ্গ থেকে আসা মুসলমানরাই মূলত তাঁর ভোটব্যাঙ্ক। সেই ভোটার বেসকে ধরে রাখার জন্যই তিনি এই রকম প্রচার করেন বলে মনে করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে ১২৬ আসনের বিধানসভায় ১৪ আসন আছে আজমলের দলের। তবে এবার যেহেতু একজোটে লড়ছে কংগ্রেস সহ প্রধান বিরোধী দলগুলি, তাই বিজেপির বিরুদ্ধে চিরাচরিত ভাবে যারা ভোট দেয়, সেটায় ভাগ হবে না, এটাই প্রত্যাশিত সমীকরণ। বিজেপি মুখপাত্র রূপম গোস্বামী বলেন যে আজমলের মন্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে তিনি খুবই চিন্তিত। কারণ আজমল জানেন এবার সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানও বিজেপিকে ভোট দেবে, বলে রূপমের দাবি। তিনি বলেন যে আজমল চাইছেন ভোটারদের মেরুকরণ করতে কিন্তু অসমের মানুষ যথেষ্ট বুদ্ধি ধরে ও তারা বিভ্রান্ত হবেন না।
আজমলের কথায় মুখ পুড়েছে কংগ্রেসের। এমনিতেই তাদের বিরুদ্ধে অনেক প্রশ্ন উঠেছে আজমলের সঙ্গে জোট করা নিয়ে। তার ওপর এরকম প্ররোচনামূলক উক্তির পর প্রশ্নের বাউন্সারে অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছেন কংগ্রেস নেতারা। রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি রিপুন বোরা বলেন যে তারা এরকম কথা কখনো বলবেন না। আজমল কি বলেছে সেটা তিনি শুনেছেন বলে রিপুন জানান যে তাঁরা AIUDF নেতার সঙ্গে কথা বলবেন। ভবিষ্যতে এরকম কোনও কথা যেন জোট শরিক না বলে সেটা তারা নিশ্চিত করবেন বলে আশ্বাস দেন কংগ্রেস রাজ্য সভাপতি। আজমল মূলত মুসলমানদের ভোট পেলেও কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে আছে সব সম্প্রদায়ে। আজমল এরকম কথা বলায় হিন্দুরা চটে যেতে পারে, এটি ভেবেই এখন রাতের ঘুম উড়েছে কংগ্রেস নেতাদের।