শনিবার দিনভর টিভির পর্দার দিকে চোখ ছিল অনেকের। যেন পঞ্চায়েত ভোটের হিংসার লাইভ। একের পর এক মৃত্য়ু। গুলি, বোমার শব্দে কেঁপে উঠল বাংলা। একেবারে যেন সেই ২০১৮ সালের ভয়াবহ স্মৃতি ফিরল বাংলায়। আর সেই হিংসার খবর যায় দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেন। তবে কি এবার ৩৫৫ নাকি ৩৫৬?
এএনআই সূত্রে খবর, এদিন তিনি বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডের সঙ্গেও কথা বলেন। বাংলার পঞ্চায়েত হিংসা নিয়ে কথা হয় তাঁদের মধ্য়ে। সূত্রের খবর, সুকান্ত মজুমদারকেও ফোন করেন নাড্ডা। এরপর তিনি জানিয়ে দেন, বাংলায় গণতন্ত্রের এই হত্যা হতে দেওয়া যাবে না, এবার এই লড়াইকে গণতান্ত্রিক পথে একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
কিন্তু এতসব কিছুর পরেও এদিন বিজেপির একেবারে নীচুতলার কর্মীরা মাটি কামড়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তারপরেও সন্ত্রাস থামেনি। বহু জায়গায় তৃণমূলের নিজেদের মধ্য়েই লড়াই শুরু হয়ে যায়। সূত্রের খবর, এদিন বিজেপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা সকাল থেকে বাংলার পঞ্চায়েত ভোট হিংসার দিকে নজর রাখছিলেন। দফায় দফায় খবর নেন তারা। মূলত হিংসায় কতজন দলীয় কর্মীর প্রাণ গিয়েছে, ভোটের ট্রেন্ড কোনদিকে তা নিয়েও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব খোঁজখবর নেন। তবে তার মধ্য়েই জেপি নাড্ডার সঙ্গে কথা শুভেন্দুর। তিনি বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডের সঙ্গেও কথা বলেন।এরপরই নির্দেশ।
কিন্তু শনিবার গোটা দিন গেরুয়া শিবির কতটা ভোট নিজেদের দিকে নিয়ে আসতে পারল সেটাও প্রশ্নের। কারণ একাধিক জায়গায় দেখা গিয়েছে একেবারে তৃণমূল স্তরে ভোট সন্ত্রাস রুখতে বিজেপি সর্বশক্তি দিয়ে ময়দানে নামতে পারেনি। তৃণমূলের নিজেদের মধ্য়ে লড়াইতে খুঁজে পাওয়া যায়নি বিজেপিকে কিছু জায়গায়। তার মধ্য়েই হুঙ্কার ছাড়েন শুভেন্দু।
শুভেন্দু সাংবাদিকদের বলেন, 'দিল্লির কে কী ভাববে, অন্য কে কী বলবে, তা আমার জানার দরকার নেই। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে বাংলাকে বাঁচানোর জন্য মন্ত্রিত্ব ছেড়ে এখানে এসেছি। আমি একটা উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছি এখানে। সেটা আমার লাভ নয়, বাংলাকে বাঁচানো। সেই লক্ষ্যে আমি অটল থাকব। সেজন্য আমাকে যা করতে হয় করব। পতাকা নিয়ে, পতাকা ছেড়ে, বাংলায় গণতন্ত্র রক্ষা করতে যা প্রয়োজন, তাই আমি তা করব।'
এর সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘এখন দু’টো মাত্র রাস্তা বাকি আছে। এক হল গণঅভ্যুত্থান। চলো কালীঘাট। ইঁটগুলো খুলে ফেলি। গুলি করুক। প্রথম সারিতে থাকা ১০ থেকে ২০ জন মারা যাবে। আমি থাকতে রাজি আছি সামনে। তার পর বাংলার ১০ কোটি মানুষ বেঁচে যাবে। অথবা ৩৫৬ বা ৩৫৫ ধারা জারি করা হোক। এর কোনও বিকল্প নেই।’ তবে কি একথা শুনেই জেপি নাড্ডা বললেন এবার এই লড়াইকে গণতান্ত্রিক পথে একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে।