গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের সংখ্যালঘুরা কার্যত এককাট্টা হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। সেই ভোট গিয়েছে মূলত তৃণমূলের ঘরেই। কিন্তু, বর্তমানে সেই সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে অনেকটাই ভাঙন ধরেছে। তাতে চিন্তিত তৃণমূল নেতৃত্ব। পঞ্চায়েত ভোটে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখাটাই তৃণমূলের কাছে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে সাগরদিঘিতে বিধানসভা উপনির্বাচনে ধরাশায়ী হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। অথচ মুর্শিদাবাদকে সংখ্যালঘু প্রধান জেলা হিসেবেই ধরা হয়। তারমধ্যে পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে সমস্ত রাজনৈতিক দলই সংখ্যালঘু ভোট টানতে মরিয়া। এই অবস্থায় বিরোধীদের কথায় কান না দেওয়ার জন্য সংখ্যালঘুদের বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: ‘আর ৩০ সেকেন্ড দেরি হলেই হেলিকপ্টারটা ক্র্যাশ করে যেত’, ভয়ংকর ঘটনা জানালেন মমতা
একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সংখ্যালঘুদের বার্তা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুরোধ করেন, ‘বিরোধীদের অপপ্রচারে কান দেবেন না। আপনারা আমাদের পাশে থাকুন।’ একই সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস বরাবরই সংখ্যালঘুদের পাশে রয়েছে বলেও মনে করিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় আপনাদের পাশে থেকেছি। বিরোধীরা অপপ্রচার চালাবেই। সেই কথাই আপনারা কান দেবেন না।’ প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে সিপিএম, কংগ্রেস থেকে শুরু করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের ব্যবহার করার অভিযোগ তুলেছেন। সোমবার জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে নির্বাচনী সভায় সংখ্যালঘুদের নিয়ে মমতা বিভাজনের রাজনীতি করেন বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু। তিনি বলেছিলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘুদের শিক্ষা দিতে পারেন নি, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান দিতে পারেনি। অন্যদিকে তাদের ভোট নিয়ে তাদের ধর্মান্ধতার কথা শিখিয়ে এনআরসি, সিএএ–র বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তাদের ভোট নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ চালাচ্ছেন।’
মমতা এদিন পালটা বিজেপির বিরুদ্ধে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, এ রাজ্যে মণিপুরের মতো অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে বিজেপি।’ পাহাড় এবং জঙ্গলমহলে সেই চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এ প্রসঙ্গে কুড়মি আন্দোলনের প্রসঙ্গ তোলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র সংখ্যালঘুদের নয়, কুড়মি আদিবাসীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে জঙ্গলমহলকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে বিজেপি।’ মমতার দাবি, ‘মণিপুরের অশান্তি পুরোটাই পূর্বপরিকল্পিত।’ তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি মণিপুরের ঘটনার পিছনে স্থানীয় কেউ রয়েছে। সেখানকার মতো এ রাজ্য জাতি দাঙ্গা বাঁধতে চাইছে বিজেপি। এমনকী জীবন সিংহকে দিয়েও হুমকি দিচ্ছে।’অন্যদিকে, এনআরসি নিয়েও তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মতুয়াদের বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিজেপি রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য এনআরসির কথা বলছে।’