কিছুক্ষণ আগেই পদাতিক এক্সপ্রেসে করে শিয়ালদায় এসে পৌঁছেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। উত্তরবঙ্গ থেকে আজ সকালে বিমানে করে কলকাতায় আসার কথা থাকলেও পরে সেই টিকিট বাতিল করে ট্রেনে ফেরেন রাজ্যপাল। ট্রেন থেকেই রাতে বাসন্তীতে নিহত তৃণমূল নেতার পরিবারকে ফোন করেছিলেন রাজ্যপাল। আর আজ সকালে শিয়ালদায় নেমেই সোজা বাসন্তীর পথে রওনা দিলেন তিনি। সেখানে গিয়ে মৃত তৃণমূল কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। এর আগে গতরাতেই শোকাহত পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন সিভি আনন্দ বোস। (পঞ্চায়েত ভোটের যাবতীয় লাইভ আপডেট জানতে ক্লিক করুন এখানে)
পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট বাজার পর থেকেই পথে নেমেছেন রাজ্যপাল। হিংসা কবলিত বহু জায়গায় গিয়েছেন তিনি। সদ্য উত্তরবঙ্গ সফরেও যান তিনি। সেখানে রাজনৈতিক হিংসার শিকার কর্মী ও পরিবারদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সেই সফর শেষে আজ সকালে বিমানে করে উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতায় ফেরার কথা ছিল রাজ্যপালের। তবে তিনি বিমানের টিকিট বাতিল করে ট্রেনে ফেরেন শহরে। বিমানে থাকলে বেশ কিছুক্ষণ ফোন বন্ধ রাখতে হবে, সেই কারণেই নাকি তিনি ট্রেনে যাত্রা করেন। ট্রেন যাত্রার সময়ই নিহত তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে ফোন করেছিলেন রাজ্যপাল। আর সোমবার সকালেই তিনি বাসন্থীর উদ্দেশে রওনা দিলেন।
উল্লেখ্য, শনিবার রাতে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে মাথায় গুলি করে খুন করা হয় জিয়ারুল মোল্লা নামে এক তৃণমূল কর্মীকে। বাসন্তীর ফুলমালঞ্চ এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছিল। জানা গিয়েছে, রাত ৯টা নাগাদ ক্য়ানিং থেকে বাড়ি ফিরছিলেন জিয়ারুল মোল্লা। তখনই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে জিয়ারুলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এদিকে শাসকদল এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আইএসএফ-এর দিকে আঙুল তুলছে। যদিও বিরোধীদের পালটা অভিযোগ, এই ঘটনার নেপথ্য়ে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই দায়ী। এদিকে ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। এই খুন নিয়ে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লার দাবি, চারজন এসে জিয়ারুলকে গুলি করে খুন করেছে। জিয়ারুল দলের সক্রিয় কর্মী ছিল। পুলিশ তদন্ত করছে। আততায়ীদের দ্রুত গ্রেফতারির দাবি তোলেন তিনি। পাশাপাশি তিনি জানান, দলও এই বিষয়টি খতিয়ে দেখছে নিজেদের মতো।
এদিকে রাজ্যপালের এহেন 'অতিসক্রিয়তা' তৃণমূল ঠিক ভালো চোখে দেখছে না। এর আগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ ওঠে, মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেও তৃণমূল কর্মীদের দিকে নজর নেই রাজ্যপালের। তবে নিরপেক্ষ থাকার বার্তা দিয়ে গীতলদহে মৃত তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে যান তিনি। রাজনৈতিক হিংসায় জখম তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালেও যান রাজ্যপাল। আর এবার বাসন্তীতে মৃত তৃণমূল কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন সিভি আনন্দ বোস।