আগামিকালই পঞ্চায়েত ভোট অনুষ্ঠিত হবে পশ্চিমবঙ্গে। এই আবহে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে। এই ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। তবে এই ব্যালট বাক্স নিয়ে যাতে কারচুপি না হয়, তার জন্য তৎপর রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এই আবহে জানা গিয়েছে, ব্যালট বাক্সে 'কিউআর কোড' থাকবে। এর আগে গত নির্বাচনে গণনা কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স বদলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এদিকে এবার ভোট প্রচারে নেমে শুভেন্দু অধিকারী ভুয়ো ব্যালট পেপার ছাপানোর গুরুতর অভিযোগও করেছেন। উল্লেখ্য, আগামিকাল মোট ৬১ হাজার ৬৩৬টি বুথের মধ্যে ভোট হবে ৬০ হাজার ৫৯৩টিতে। (পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতী খবর ও লাইভ আপডেট জানতে ক্লিক করুন এখানে)
জানা গিয়েছে, এবার অধিকাংশ বুথেই নতুন ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য পুরনো ব্যালট বাক্সেই ভোটগ্রহণ হবে। এই সব ব্যালট বাক্সেই নির্দিষ্ট কিউআর কোড এবং নম্বর লাগানো হয়েছে। প্রতিটি বুথে চারটি করে ব্যালট বাক্স পাঠানো হচ্ছে। কমিশন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, কোন বুথে কোন ব্যালট বাক্স পাঠানো হচ্ছে, সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য থাকবে সেই কিউআর কোডে। তা স্ক্যান করলেই সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। এতে ভোট প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বাড়বে। কারচুপির অভিযোগ উঠলে তা খতিয়ে দেখা যাবে। ভোটকেন্দ্রে ব্যালট বাক্স বদলের মতো ঘটনা রোখা সম্ভব হবে।
গত ফেব্রুয়ারি থেকেই নাকি ব্যালট বাক্সগুলিতে কিউআর কোড লাগানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। এদিকে ব্যালট বাক্সের নির্দিষ্ট নম্বর কমিশনের পোর্টালে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল জেলা প্রশাসনকে। প্রসঙ্গত, বাম আমল থেকেই বিরোধীরা পঞ্চায়েত ভোটে ব্যালট বদলের অভিযোগ তুলতেন বিরোধীরা। তৃণমূল জমানাতেও সেই অভিযোগ উঠেছে। এদিকে পঞ্চায়েতের মনোনয়ন পর্ব থেকেই দফায় দফায় হিংসা ছড়িয়েছে রাজ্য জুড়ে। এই আবহে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর যেন প্রশ্ন চিহ্ন না ওঠে সেদিকে নজর কমিশনের।
গতরাতে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোঅর্ডিনেটর (বিএসএফ) আইজি-র সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পৌঁছয়নি রাজ্যে। পঞ্জাব, তামিলনাড়ু, কেরল, রাজস্থান সহ দূর দূরান্তের বহু রাজ্য থেকে বাহিনী রওনা তো দিয়েছে। তবে শনিবার ভোটের আগে ঠিক সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বাহিনী মোতায়েন করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বাকি ৪৮৫ কেন্দ্রীয় বাহিনীর মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বাহিনী নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে সময় মতো। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, এই বাকি বাহিনী সময় মতো পৌঁছতে না পারলে ভোট কী ভাবে মেটানো হবে?