পশ্চিমবঙ্গের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট অনুষ্ঠিত হয় গত শনিবার। শনির দশায় কাটে সেই দিনটা। রাজনৈতিক হিংসায় সেদিন প্রাণ গিয়েছে বহু মানুষের। বহু জায়গায় আবার জেজার ছাপ্পার অভিযোগ উঠেছে। জনরোষ আছড়ে পড়তে দেখা গিয়েছে শাসকদলের ওপর। কোথাও ছাপ্পা রুখতে ব্যালট বাক্স নিয়ে গিয়ে জলে ফেলা হয়েছে, আবার কোথাও তা ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই আবহে গতকাল আবার ৬৯৬টি বুথে পুনর্নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ফল প্রকাশের দিন। গ্রাম বাংলা কার দখলে? এই প্রশ্নের জবাব পাওয়ার দিন। সকাল ৮টা থেকে ভোট গণনা শুরু হবে আজ। আজ রাজ্যের মোট ৩৩৯টি কেন্দ্রে ভোট গণনা হবে। ভোট গণনা কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য আজ থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রতিটি ভোট গণনা কেন্দ্রে এক কোম্পানি করে জওয়ান থাকবে আজ। (পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল সংক্রান্ত যাবতীয় খবর এবং লাইভ আপডেট জানতে ক্লিক করুন এখানে)
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের পর মোড় ঘুরেছিল বাংলার রাজনীতির। ১৮-র ফলের ওপর ভর করে ২০১৯-এর লোকসভায় পশ্চিম এবং উত্তরে দাপট দেখিয়েছিল বিজেপি। এই আবহে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ওপর ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের প্রভাব পড়তে পারে। এই আবহে গ্রাম বাংলা দখলের লড়াইয়ের দিকে নজর সবার।
এর আগে ২০১৮ সালে যেকটি পঞ্চায়েতে আসনে ভোট হয়, তার মধ্যে তৃণমূল জেতে ২১,১৩৯টি আসনে। বিজেপি জয়ী ৫৭৫৯ আসনে। বামেরা ১৭১২, কংগ্রেস ১০৬৫ এবং অন্যান্যরা ১৯৪২ আসনে জিতেছিল। এদিকে গতবার যেকটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে ভোট হয়েছিল তার মধ্যে তৃণমূল জিতেছিল ৪৯১৮টিতে। বিজেপি জয়ী হয়েছিল ৭৬৪টি আসনে। বামেরা ১২৯, কংগ্রেস ১৩১ এবং অন্যান্যরা ১২৪টি আসনে জয়ী হয়েছিল। গতবার জেলা পরিষদের মোট ৮২৪টি যেকটিতে ভোট হয়, তার মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ৫৮০টি আসন, বিজেপি পেয়েছিল ২৩টি আসন। কংগ্রেস ৫টি, বামেরা দু'টি এবং অন্যান্যরা ২টি আসনে জয়ী হয়েছিল।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ৩৪ শতাংশ আসনে ভোট হয়নি। গতবার পঞ্চায়েতের ৪৮,৬৫০ আসনের মধ্যে ১৬,৮১৪, পঞ্চায়েত সমিতির ৯,২১৭ আসনের মধ্যে ৩,০৫৯ এবং জেলা পরিষদে ৮২৫টি আসনের মধ্যে ২০৩টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতয় জয়ী হয়েছিল শাসকদলের প্রার্থীরা। এবারে বাংলার মোট ৬৩,২২৯টি পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ৮,০০২টি, ৯৭৩০টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ৯৯১টি এবং ৯২৮টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে ১৬টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।