বাংলায় নয়, বিহারে রাহুল গান্ধীর গাড়িতে ঢিল ছোড়া হয়েছে। এমনই দাবি করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে নাম না করে পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকেও তোপ দেগেছেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। মমতা বলেন, ‘আমরা এসব পছন্দ করি না। এসব করিও না। এসব করে অহেতুক নাটক করে কী লাভ!’ আর ঠিক সেই বিষয়টি নিয়ে অধীরকে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি প্রশ্ন তোলেন, বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে কি ইচ্ছা করে বাংলার নাম খারাপ করার চেষ্টা করছেন অধীর? এমনকী ইন্ডিয়া জোট ভেঙে দিতে অধীরের সাঙ্গপাঙ্গরাই ইচ্ছাকৃতভাবে রাহুলের গাড়ির কাচ ভেঙেছেন কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন দেবাংশু।
বুধবার বিহার থেকে মালদায় আসার সময় হরিশ্চন্দ্রপুরে দেওয়ানগঞ্জের কাছে দেখা যায় যে রাহুলের গাড়ির পিছনের কাচ পুরো ভেঙে আছে। সেই ঘটনায় ঘুরিয়ে তৃণমূলের দিকেই আঙুল তোলেন অধীর। তিনি বলেন, ‘যারা ভাঙার, তারাই ভেঙেছে।’ সেইসঙ্গে ঘুরিয়ে তিনি ইঙ্গিত দেন যে ঢিল ছুড়ে সম্ভবত পশ্চিমবঙ্গেই ওয়াইনাডের কংগ্রেস সাংসদ রাহুলের গাড়ির কাচ ভাঙা হয়েছে।
যদিও অধীরের সেই ইঙ্গিতপূর্ণ তত্ত্ব খারিজ করে দেন মমতা। মুর্শিদাবাদে সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি হেলিকপ্টারে আসতে-আসতে একটা মেসেজ পেলাম যে কংগ্রেসের একজন নেতা....রাহুলের নামটাই বলে দিই। ও আমার থেকে ছোট। ওর গাড়িতে নাকি কে ঢিল মেরেছে। পরে আমি খোঁজ নিলাম। কারণ আমরা এসব পছন্দ করি না। এসব করিও না। এসব করে অহেতুক নাটক করে কী লাভ! পরে খোঁজ নিয়ে দেখলাম, বাংলায় নয়, ওটা কাটিহারে হয়েছে। কাচ ভাঙা অবস্থায় ওরা বাংলায় ঢুকেছে।’
মমতা আরও বলেন, ‘কিন্তু আমি ঘটনার নিন্দা করি। কারও উপর আক্রমণ হলেই আমি নিন্দা করি। বিহারে সবে বিজেপি আর নীতীশ (নীতীশ কুমার) এক হয়েছে। ওদের রাগ থাকতেই পারে। কিন্তু আমাদের এখানে যেন কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে। কোনও পার্টি মিছিল করতেই পারে। মিটিং করতেই পারে। শান্তিপূর্ণভাবে মিটিং করুক, মিছিল করুক। আমার কোনও আপত্তি নেই।’
মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি অধীরের নাম না নিলেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে আক্রমণ শানিয়েছেন দেবাংশু। তিনি বলেন, ‘রাহুল গান্ধীর গাড়ির কাঁচ ভেঙেছে ডিএস কলেজের সামনে। এই কলেজের অবস্থান বিহারের কাটিহারে। অধীর চৌধুরী কি বাংলাকে বদনাম করার টেন্ডার পেয়েছেন বিজেপির থেকে? অকারণে বাংলার মুখে কালি লাগালে বাংলা-বিরোধীরাই আনন্দিত হতে পারে। অধীরবাবুর অতি উত্তেজনা দেখে এখন আমার সন্দেহ, ইন্ডিয়া জোটে ফাটল ধরাতে তাঁরই দলবল এ ঘটনা ঘটায়নি তো?’
আরও পড়ুন: Rahul Gandhi: বিজেপি জমানায় প্রতিদিন কতজন কৃষক আত্মহত্যা করতে বাধ্য় হন? বিরাট দাবি করলেন রাহুল
সেইসবের মধ্যেই নিজের দল থেকেই সমর্থন পাননি অধীর। রাহুলের গাড়ির কাচ ভাঙা নিয়ে অধীর যে তত্ত্বের ইঙ্গিত দেন, সেটা খারিজ করে দেন কংগ্রেসের সুপ্রিয়া শ্রীনেত। তিনি বলেন, ‘ভুয়ো খবরের বিষয়টি স্পষ্ট করে দেওয়া উচিত। রাহুলজির সঙ্গে দেখা করার জন্য প্রচুর মানুষ আসছিলেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য এক মহিলা একদম সামনে চলে আসেন, তখন আচমকা গাড়ি দাঁড় করাতে হয়। ন্যায়ের জন্য লড়াই করছেন রাহুলজি। আর এই দেশ শুধুমাত্র ওঁনার পাশে দাঁড়িয়ে নেই এবং তাঁকে সুরক্ষিতও রাখবে।’