লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে এখন সমানে সমানে টক্কর চলছে। কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ আচরণ এবং বঞ্চনার কথা বারবারই একাধিক সভা–সমাবেশ থেকে তুলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার ডানলপ এবং জেসপ কারখানা বহুদিন ধরে বন্ধ থাকার জেরে কেন্দ্রীয় সরকারকে দুষলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলাগড়ের বাকুলিয়া ধোবাপাড়া পঞ্চায়েতের গঙ্গাধরপুরে হুগলির তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে নির্বাচনী জনসভা করেন। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার ডানলপ–জেসপ অধিগ্রহণ করতে চাইলেও কেন্দ্র তাতে অনুমোদন দেয়নি। নিজেরাও উদ্যোগ নেয়নি। ফলে কারখানা দুটি বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের কর্মসংস্থান এবং শিল্পায়নের পক্ষে বহু চেষ্টা করছেন। এমনকী শিল্প ও বিনিয়োগ টানতে তিনি বিদেশেও যান। সেখানে নিজের রাজ্যে দুটি বড় কারখানা বন্ধ হয়ে আছে সেটা মেনে নিতে রাজি নন মুখ্যমন্ত্রী। তাই বারবার কেন্দ্রকে চিঠি লিখে এই দুটি কারখানা রাজ্যের হাতে তুলে দিতে আর্জি জানান। এবার নির্বাচনী প্রচারে তৃণমূল সুপ্রিমো দাবি করেন, ‘অনেক কারখানা পোলবা–দাদপুর থেকে শুরু করে শিল্প পার্ক, অনেক কিছু তৈরি করা হয়েছে। আমি বন্ধ কারখানা খুলে রেখেছিলাম। কিন্তু এরা বন্ধ করে দিয়েছিল। শ্রমিকদের মাইনেও বন্ধ করেছিল। ২০১৬ সালে আমরা বিল পাশ করে বলেছিলাম, ডানলপ আর জেসপ আমাদের দিয়ে দিতে। রাজ্য সরকার চালাবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত দিল্লির সরকার তা দেয়নি।’
আরও পড়ুন: দিব্যেন্দু অধিকারীর গাড়ি আটকে পুলিশের তল্লাশি, সভায় যেতে দেরি, কী মিলল?
ডানলপ এবং জেসপ কারখানা রাজ্যের হাতে থাকলে বড় পরিমাণে কর্মসংস্থান হতো। কিন্তু কারখানা দুটি বন্ধ থাকায় সেটা করা যাচ্ছে না। তাই মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, কারখানা মালিকের সঙ্গে বিজেপির যোগসাজশ রয়েছে। তাই কারখানা রাজ্যের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। অথচ বন্ধ ওই কারখানার শ্রমিকদের মাসে ১০ হাজার টাকা করে রাজ্য সরকার দেয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘আমি চাই ডানলপ, জেসপ খুলুক। কিন্তু ওরা নিজেরাও খুলবে না। আর আমাদেরও খুলতে দেবে না। এটা কি মামদোবাজি নাকি!’
এছাড়া ডানলপ বামফ্রন্ট সরকারের জমানা থেকেই ধুঁকছিল। ২০১১ সালের পর আর খোলেনি। ২০১৭ সালে ডানলপ কারখানায় লিকুইডেশনের নোটিশ ঝোলে। কিন্তু হুগলি জেলার সিঙ্গুরে জমি আন্দোলন হয় কৃষকদের স্বার্থে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, সেই জমির ৪৩৪ একরে চাষ হচ্ছে। টিউবওয়েল বসেছে। কৃষিভিত্তিক শিল্প হচ্ছে। শিল্প পার্ক গড়া হচ্ছে। জমি নিয়ে আন্দোলন যাঁরা করেছিলেন এমন ৩৬১১ জনকে এখনও মাসে ২ হাজার টাকা এবং ১৬ কেজি চাল দেওয়া হয়। আর সরকারি কলেজ, ট্রমা কেয়ার সেন্টার, হুগলি পুলিশ জেলার সদর কার্যালয় হয়েছে।