মঙ্গলবার তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের সমর্থনে বনগাঁয় সভা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনসভায় তিনি এবার সরাসরি আক্রমণ করলেন নির্বাচন কমিশনকে। কমিশনকে সম্মান জানিয়েও তাঁর আক্রমণ, কয়েকজন বিজেপির ''হাতের পুতুল' হয়ে গিয়েছে।
মঙ্গলবার কল্যাণীর ১৪ ওয়ার্ডের সভায় বক্তব্য রাখছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি বলেন, ‘আগে এ রকম নির্বাচন আমি দেখিনি। আমি নির্বাচন কমিশনকে সম্মান করি। কিন্তু কয়েকজন বিজেপির হাতের পুতুল হয়ে গিয়েছে। দু-তিন মাস ধরে নির্বাচন হচ্ছে। সব সরকারি কাজ বন্ধ। শুধু মোদীকে সমর্থন জোগাতে এমন করছে। আপনাদের জন্য অনেক সম্মান রইল।’
এদিন সভার শুরুতেই মমতা বলেন, ‘অনেক দিন ধরে সভা করছি। কথা বলতে কষ্ট হয়েছে। কিন্তু বলে যেতে হবে। ’
আরও পড়ুন। অর্জুন সিং কেন ডেঞ্জারাস? শান্তনু ঠাকুর কি টাকা তুলেছেন? বিস্ফোরক তথ্য দিলেন মমতা
বিজেপিকে আক্রমণ
মঞ্চ থেকে তিনি বিজেপি আক্রমণ করে বলেন, 'আপনারা জানেন এই নির্বাচন বাংলা চালানোর নির্বাচন নয়, দিল্লি চালানোর নির্বাচন। কিন্তু আমরা বলছি পাল্টে দিন। যিনি এখন প্রধানমন্ত্রী আছেন, তাঁর অত্যাচারে এবং বিজেপির অত্যাচারে মানুষ অত্যাচারিত। হয় জেলে আর নয় গেলে। মাঝখানে আর কিছু নেই। তফসিলিদের মধ্যে প্রথম উত্তরপ্রদেশ। বিজেপির রাজ্য। সেখানেই সব থেকে বেশি অত্যাচার হয়েছে।'
আরও পড়ুন। ‘বিজেপি বড়জোর ১৯৫ আসন পাবে’, ইন্ডিয়া সরকার গড়ার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী সুর মমতার
কোভিড কালের স্মৃতিচারণ
এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা কোভিড কালের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, আমরা গঙ্গাতে স্নান করি। নদীতে ডুবদি, সমুদ্রে ডুবদি। গঙ্গার জোয়ারে নোংরা ভেসে আসে। জোয়ার আবার টেনে নিয়ে যায়। রাজনীতিও জোয়ার ভাটা। একবার নয় গঙ্গায় হাজারবার স্নান করতে পারি। কিন্তু কেউ গঙ্গায় স্নান করলেই সে পবিত্র হয়ে গেল।' তিনি কোভিডের সময়কাল টেনে বলেন, 'কোভিডে প্রচুর মানুষ মারা গিয়েছে। আমার ভাইও মারা গিয়েছে। সেই উত্তরপ্রদেশ দিয়ে অনেক দেহ গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। দূষণ করা হয়েছিল। মুর্শিদাবাদে অনেক দেহ এসেছিল। আমরা দাহ করেছিলাম। আমরা সম্মান দিয়েছে। কিন্তু বিজেপি সম্মান দেয়নি।'
এদিন সভামঞ্চ থেকে সম্প্রতি চাকরিহারাদের প্রসঙ্গে তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। সাম্প্রতিক হাইকোর্টের রায়ে প্রায় ২৬ হাজার চাকরি গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে মমতা এই অবস্থার জন্য বাম-বিজেপি এবং কংগ্রেসকে দায়ি করেন।
প্রসঙ্গত, বনগাঁ কেন্দ্রটি ২০১৯-সালে তৃণমূলের থেকে কেড়ে নেয় বিজেপি। এবার তা ফিরে পেতে মরিয়া ঘাসফুল শিবির।