গতকালই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মুকুল সাংমা দাবি করেছিলেন যে এনপিপি-বিজেপি জোটের সরকার গঠন ঠেকানোর জন্য একজোট হচ্ছে সকল বিরোধী দলগুলি। তবে সেই দাবিকে অগ্রাহ্য করেই মেঘালয়ের রাজ্যপালের কাছে গিয়ে ৩২ বিধায়কের সমর্থন পত্র দিয়ে এসেছিলেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা। সেই ৩২ বিধায়কের মধ্যে ছিল দুই হিল স্টেট পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। তবে এবার হিল স্টেট পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি দাবি করল যে কনরাড সাংমাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য বিধায়কদের কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি দলের তরফে। এই পরিস্থিতিতে মেঘালয়ে সরকার গঠন করতে গিয়ে 'হোঁচট' খেলেন কনরাড। (আরও পড়ুন: 'ক্ষমতায় থাকার অধিকার হারিয়েছে সরকার', হকের ডিএ না পেয়ে বিস্ফোরক সরকারি কর্মী)
উল্লেখ্য, ৬০ আসন বিশিষ্ট মেঘালয়ে ম্যাজিক ফিগার ৩১। এদিকে সেই রাজ্যে ভোট হয়েছিল ৫৯টি আসনে। একটি আসনে নির্বাচন হওয়া বাকি। এই আবহে ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, মেঘালয়ে এনপিপি জিতেছে ২৬টি আসনে, বিজেপি জিতেছে ২ আসনে এবং হিল স্টেট পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি জিতেছে ২টি আসনে। এদিকে দুই নির্দল প্রার্থীও জয়ী হয়েছে। এই আবহে কনরাড, ২ নির্দল, নিজের দলের ২৬ বিধায়ক, বিজেপির ২ বিধায়ক এবং হিল স্টেট পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ২ বিধায়কের সমর্থন পত্র রাজ্যপালকে জমা দেন।
এরই মাঝে মেঘালয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল ইউডিপি-র নেতা লাকমেন রিম্বুইয়ের বাড়িতে বৈঠকে বসেন কংগ্রেস, ভিপিপি, পিডিএফ, হিল স্টেট পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব। এই দলগুলির কাছে সম্মিলিত ভাবে ২৯ জন বিধায়ক আছে। ইউডিপি-র বিধায়ক সংখ্যা ১১, কংগ্রেসের রয়েছে ৫ বিছায়ক, তৃণমূল জিতেছে ৫ আসনে, ভিপিপির ঝুলিতে রয়েছে ৪টি আসন, পিডিএফ জিতেছে ২টি আসনে আর হিল স্টেট পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির দুই বিধায়ক জিতেছেন। এই আবহে হিল স্টেট পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সভাপতি কেপি পাংনিয়াং এবং সচিব প্যানবোরলাং রিনতাথিয়াং দাবি করেন, বিধায়কদের এনপিপি-বিজেপি সরকারকে সমর্থনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। যদিও এই নিয়ে কিছু বলেননি কনরাড সাংমা। তবে এনপিপি-র দাবি, হিল স্টেট পার্টির দুই বিধায়ক ছাড়াও সরকার গঠনের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক বিধায়ক রয়েছে তাদের কাছে। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর এনপিপি-র নেতৃত্বে যে সরকার গঠন হয়েছিল, তার অংশ ছিল ইউডিপি এবং হিল স্টেট পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টিও।
তৃণমূল নেতা মুকুল দাবি করেছেন, 'এবার মেঘালয়ের মানুষ কোনও সংখ্যাগরিষ্ঠ মত পোষণ করেননি। এটা পরিবর্তনের জনাদেশ। বাকি রাজনৈতিক দলগুলিতে বুঝতে হবে যে এই জনাদেশের ফলে দায়িত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে (আমাদের) একসঙ্গে কাজ করতে হবে।' এই আবহে মেঘালয়ে শেষ মুহূর্তে কোনও ভাবে খেলা ঘুরে যায় কি না, সেদিকে নজর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।