দেশভাগের সময় এরকম ঘটনা শুনেছিলেন। কলকাতায় এসে বাংলায় ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। দাবি করলেন, ভোটের ফল প্রকাশের পর কখনও এরকম ঘটনার সাক্ষী থাকেনি স্বাধীন ভারত।
দু'দিনের সফরে মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতায় আসেন নড্ডা। বিমানবন্দরের বাইরে তিনি জানান, আপাতত দক্ষিণ ২৪ পরগনায় যাবেন তিনি। তারপর ভোট-পরবর্তী হিংসায় মৃত বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে যাবেন। নড্ডা বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের পর যে ঘটনার সাক্ষী থাকলাম, তাতে আমরা হতবাক, আমরা চিন্তিত। দেশভাগের সময় এরকম ঘটনার কথা শুনেছিলাম। ভোটের পর স্বাধীন ভারতে আমরা কখনও এরকম ঘটনা দেখিনি।’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা মতাদর্শগত লড়াই এবং তৃণমূল কংগ্রেসের কাজকর্মের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা গণতান্ত্রিকভাবে লড়াই করতে প্রস্তুত।’
বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজনৈতিক হিংসার খবর মিলছে। খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তি বজায়ের আর্জি জানালেও পরিস্থিতির উন্নতির হয়নি। উলটে ক্রমশ ‘লাগামছাড়া’ হচ্ছে ভোট-পরবর্তী হিংসা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অভিযোগের নিশানায় তৃণমূল কংগ্রেস। একাধিক বাম ও বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেছেন, রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভা থেকেই হিংসার খবর আসছে। ছ'জন বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন দিলীপ।
একইসঙ্গে বাংলার হিংসা নিয়ে সরব হয়েছে সিপিআইএম। সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, 'এই ধরনের ভয়ানক হিংসা কি তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয় উৎসব? নিন্দনীয়। প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে এবং প্রত্যাখান করা হবে। (করোনাভাইরাস) মহামারীর মোকাবিলার পরিবর্তে এরকম হাঙ্গামা শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বরাবরের মতো সিপিআইএম মানুষকে রক্ষা করবে, সাহায্য করবে, ত্রাণ প্রদান করবে।'
ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে সোমবারই রাজ্য সরকারের থেকে রিপোর্ট তলব করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মঙ্গলবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় জানিয়েছেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা’ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টুইটারে ধনখড় বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ফোন করেছিলেন এবং অত্যন্ত উদ্বেগজনক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দুঃখ এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিনা বাধায় হিংসা, ভাঙচুর, লুঠ এবং হত্যার ঘটনা চলতে থাকায় আমি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের কাছে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। (সুষ্ঠু আইন-শৃঙ্খলা) পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের বাড়তি কাজ করতে হবে।’