রাত আটটা পর্যন্ত প্রচারে নিষেধাজ্ঞা। তার ঠিক ৩০ মিনিট পরেই আগামিকাল (মঙ্গলবার) রাত সাড়ে আটটার সময় উত্তরবঙ্গের ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে সভা করবেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর এমনটাই।
নির্বাচন কমিশনের প্রচারের নিষেধাজ্ঞা জারি করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামিকাল বেলা ১২ টা থেকে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসতে চলেছেন মমতা। কতক্ষণ সেই ধরনা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন, তা স্পষ্ট করা হয়নি। তবে তৃণমূল সূত্রের খবর, ধরনা শেষের পর উত্তরবঙ্গে রওনা দেবেন মমতা। ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে রাত সাড়ে আটটা থেকে সভা করবেন তিনি।
এমনিতে পূর্ব-নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার বারাসত, বিধাননগর, হরিণঘাটা ও কৃষ্ণগঞ্জে সভা করার কথা ছিল মমতার। কিন্তু প্রচারে কমিশনের নিষেধাজ্ঞার পর সেই সভা করতে পারছেন না তিনি। যা তৃণমূলের কাছে বড় ধাক্কা ছিল বলে মনে করছিলেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। বিশেষত পঞ্চম দফায় প্রচারের সময়সীমা এগিয়ে আনায় প্রার্থীদের প্রচার শেষ করতে হবে বুধবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬ টা ৩০ মিনিটের মধ্যে। তার ফলে পঞ্চম দফার আগে হাতে বেশি সময় পাবেন না মমতা। কার্যত তাঁর হাতে শুধু বুধবার পড়ে থাকত। কিন্তু মঙ্গলবার সভা করে প্রচারের সময় আরও একটু বাড়িয়ে নিলেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রচারের সময় বাড়ানোর বিষয়টি ঠিক তো বটেই। একইসঙ্গে বিরোধীদের বার্তাও দিয়ে গেলেন মমতা।
সোমবার সন্ধ্যায় চব্বিশ ঘণ্টার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চাপায় নির্বাচন কমিশন। তার ফলে সোমবার রাত আটটা থেকে আগামিকাল আটটা পর্যন্ত প্রচার করতে পারবেন না তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। কমিশনের তরফে অবশ্য কড়া ভাষায় জানানো হয়েছে, আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৩ (৩) ও ৩ (এ) ধারা এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬, ১৮৯ এবং ৫০৫ ধারা ভঙ্গ করেছেন মমতা। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, গত ৭ এপ্রিল সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ভাগ না করার জন্য মমতা যে আর্জি জানিয়েছিলেন, তাতে নোটিশ জারি করা হয়েছিল। দু'দিন পর তিনি যে উত্তর দিয়েছিলেন, তা সন্তোষজনক ছিল না। বরং বেছে বেছে, আংশিকভাবে উত্তর দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেইসঙ্গে চিঠিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধেও একপ্রস্থ অভিযোগ তুলেছিলেন। তা নিয়েও যে নোটিশ পাঠানো হয়েছিল, তাতেও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এড়িয়ে যান মমতা।
কমিশন জানিয়েছে, মমতা যে মন্তব্য করেছেন, তা অত্যন্ত উস্কানিমূলক এবং প্ররোচনামূলক। তার জেরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি হতে পারত। যা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। সেই মন্তব্যের নিন্দার করার পাশাপাশি কড়া ভাষায় সতর্ক করা হয়েছে মমতাকে। সেই সঙ্গে আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর থাকার সময় এইরকম মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার 'পরামর্শ' দিয়েছে কমিশন।