ভোট–পঞ্চমীর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে রাজ্য–রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠল। কারণ নন্দীগ্রামে তিনি প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। বিপক্ষে ছিলেন তাঁর প্রাক্তন সৈনিক শুভেন্দু অধিকারী। যিনি দলবদল করে এখন বিজেপিতে। দীর্ঘ ২১ বছর ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। তারপরও শুভেন্দু তাঁর বিশ্বস্ত ছিলেন না বলে দাবি করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর ২০১৬ সালে বিধায়ক হয়ে মমতার মন্ত্রিসভায় পরিবহনমন্ত্রী হয়েছিলেন। এমনকী একসময়ে তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতিও হয়েছিলেন।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে শুভেন্দু অধিকারী যোগ দেন বিজেপিতে। বৃহস্পতিবার এক সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ও কখনও আমার বিশ্বস্ত ছিল না। নন্দীগ্রামে বৈঠক করতে গিয়েছি, মঞ্চ থেকে নেমে গিয়েছে। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নন্দীগ্রামে বাপ–ব্যাটাকে কনফিডেন্সে নিয়ে সূর্যোদয় করেছিলেন। পরে আমি বিশদে সব জানতে পেরেছি। দরকার হলে লক্ষ্মণ শেঠকে জিজ্ঞেস করুন। দলে ছিল। তাই সহ্য করেছি।’
এদিনের সাক্ষাৎকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, নন্দীগ্রামে ভোটের দিন তিনি সেখানকার বয়ালে একটি প্রাথমিক স্কুলের বুথ আগলে টানা দু’আড়াই ঘণ্টা পড়েছিলেন রিগিং রুখতেই। নন্দীগ্রামে ১০টি বুথে রিগিং করেছে বিজেপি। আমি তিন ঘণ্টা বয়ালে বসে না থাকলে ৭০টি বুথে ওরা রিগিং করত। তেমনই পরিকল্পনা করেছিল। অযথা আমি ওখানে বসেছিলাম না। ওখানে আমাদের এজেন্টকে বসতে দেয়নি। মেরে মুখ ফাটিয়ে দিয়েছে।’
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন স্বীকার করেন, আবেগতাড়িত হয়েই তিনি নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘নন্দীগ্রামের ফল কী হবে, সেটা মানুষ ঠিক করবে। মানুষ যে ফল দেবে, হবে। মানুষের উপর আমার বিশ্বাস রয়েছে। নন্দীগ্রামের ফল কী হবে, দেখতে পাবেন। মানুষের উপর আমার বিশ্বাস রয়েছে। এই লড়াই বাংলা মায়ের ইজ্জত রক্ষার লড়াই। এই ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস দুই–তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরবে।’