সত্তরের দশকে বাঙালির রাতের ‘রঙিনপরী’ মিস শেফালি চলে গেলেন চিরঘুমের দেশে। বৃহস্পতিবার সকাল ছ’টা নাগাদ সোদপুরের নিজের বাড়িতেই মৃত্যু হয় মিস শেফালির। বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন ‘কুইন অফ ক্যাবারে’। হ্যাঁ, এই নামেও পরিচিত ছিলেন তিনি। প্রথম বাঙালি ক্যাবারে ডান্সার ছিলেন মিস শেফালি।
এদিন হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে মিস শেফালির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন তাঁর ভাগ্নী এলভিনা দাস। এলভিনা জানান, ‘কিছুদিন আগেও শারীরিক অসুস্থতার জন্য দক্ষিণ কলকাতার এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। বাড়িতে এসে সুস্থই ছিলেন তিনি। সামন্য হাঁটাচলাও করছিলেন। তবে বৃহস্পতিবার ভোরে সব শেষ হয়ে গেল’।
একটা সময় নাচের ছন্দে কলকাতার রাত রঙিন করে রাখতেন মিস শেফালি। পার্কস্ট্রিট থেকে গ্র্যান্ড হোটেল মেতে উঠত মিস শেফালির নাচের তালে তালে। তবে আহিরীটোলার এক বস্তির দাস পরিবারের তিন নম্বর কন্যা আরতির মিস শেফালি হয়ে ওঠার যাত্রাপথ ছিল কাঁটায় ভরা। মাত্র চোদ্দ বছর বয়সেই সংসারের গোটা দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন আরতি দাস। এরপর তিনিই হয়ে ওঠেন রাতের কলকাতার ‘রাতপরী’ মিস শেফালি। বাঙালির রাতের আলো-আঁধারির রোশনাই ছিলেন তিনি।
তিনি অভিনয় করেছেন সত্যজিত্ রায়ের পরিচালনায় 'প্রতিদ্বন্দ্বী' (১৯৭০) এবং 'সীমাবদ্ধ' (১৯৭১)ছবিতে অভিনয়ও করেছেন মিস শেফালি। তবে অতীতের এই লাস্যময়ী দীর্ঘদিনের দোসর থেকেছে অর্থাভাব। পাশাপাশি শেষজীবনেও নিজের যোগ্য সম্মান না পাওয়ার আক্ষেপ বারবার উঠে এসেছে তাঁর কথায়। মঞ্চ থেকে সিনেমা সত্তরের দশকে ক্যাবারের দুনিয়ায় একচ্ছত্র রাজত্ব ছিল এই বাঙালি কন্যের। শীঘ্রই কঙ্কনা সেন শর্মা বাঙালির নিভে যাওয়া তারকা, মিস শেফালির বায়োপিক তুলে ধরতে চলেছেন এক ওয়েব সিরিজে।
মিস শেফালির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন টুইট বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, 'অভিনেত্রী আরতি দাসের মৃত্যুর খবরে শোকাহত, মিস শেফালি নামেও উনি পর্দায় জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। সত্যজিত্ রায়ের দুটি ছবি 'প্রতিদ্বন্দ্বী' এবং 'সীমাবদ্ধ' য় অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁর পরিবার ও অনুরাগীদের প্রতি সমবেদনা'।