বাবা আমজাদ খানের মৃত্যুর পর পরিবারের আর্থিক অবস্থা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন ছেলে তথা অভিনেতা শাদাব খান। এক নতুন সাক্ষাৎকারে শাদাব বলেছেন, আমজাদ সবসময় সিনেমার প্রযোজকদের টাকা ধার দিয়েছেন কিন্তু কখনও তা ফেরত চাননি। তিনি আরও যোগ করেছেন, প্রযোজকদের থেকে ১.২৫ কোটি টাকা পাওনা ছিল পর্দার ‘গব্বর সিং’-এর, কিন্তু আমজাদের মৃত্যুর পর সেই টাকা শোধ করেননি তাঁরা।
বলিউডের ইতিহাসে চিরকাল আমজাদের নাম উল্লেখ করা হয় গর্বের সঙ্গে। তবে সেই আমজাদ খান একসময় জীবন কাটিয়েছেন তীব্র দারিদ্রে। একই সাক্ষাৎকারে শাদাব ফাঁস করেন, ব্যাঙ্কে টাকা রাখতেন না আমজাদ। বিশ্বস্ত বন্ধুদের কাছে জমা রাখতেন টাকা। তবে অভিনেতার মৃত্যুর পর মাত্র কয়েকজন সেই টাকা ফেরত দিয়েছিলেন। মধ্যপ্রাচ্যের এক গ্যাংস্টার তাঁদের অর্থের প্রস্তাব দেয়, কিন্তু আমজাদের স্ত্রী শায়লা খান তা 'প্রত্যাখ্যান করেছিলেন'। আরও পড়ুন: শোলে সাইন করার দিনই ছেলের জন্ম, এদিকে বউ-বাচ্চাকে বাড়ি আনার টাকা ছিল না আমজাদের
১৯৯২ সালে জুলাই মাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আমজাদ খান। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৫১ বছর। শায়লা এবং আমজাদের তিন সন্তান- শাদাব, আহলাম খান এবং সীমাব খান। ‘শোলে’-তে আমজাদের চরিত্র গব্বর সিং তাঁর সবচেয়ে স্মরণীয় চরিত্রে পরিণত। বছরের পর বছর ধরে, তিনি বেশ কয়েকটি সফল চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন, বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শাদাব জানিয়েছেন, ‘লোকেদের সাহায্য করার অভ্যাস ছিল আমার বাবার। এভাবে প্রচুর টাকা ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। প্রযোজকরা বাড়িতে এসে তাঁকে কান্নাকাটির গল্প শোনাতেন, বাবাকে তাঁদের বাড়ির চাবি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতেন। সেই সময় তিনি ওঁদের দিকে দেখতেন, নিজের টাকার খেয়াল করতেন না। এমনকি ব্যাঙ্কের জায়গায় বন্ধুদের কাছে টাকা রাখতেন। বাবার মৃত্যুর পর প্রযোজকদের কাছ থেকে ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা পাওনা ছিল। সেই লট থেকে কেউ টাকা দিতে এগিয়ে আসেনি। কিছু লোক তার কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিল এবং গুটি কয়েকজন তা ফেরত দিয়েছে। ভেবে দেখুন, আমরা কত টাকা ক্ষুইয়েছি, যা আমাদের ছিল।’ আরও পড়ুন: ঠাকুরের ‘কাটা হাত’ বেরিয়ে পড়েছিল কুর্তার ফাঁক দিয়ে! দেখুন শোলে'র সেই দৃশ্য
আমজাদ পুত্র আরও যোগ করেন, ‘আমার বাবা মারা যাওয়ার প্রায় চার মাস পর, মধ্যপ্রাচ্য থেকে একজন গ্যাংস্টার ফোন করে আমার মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল। তিনি মাকে বলেছিলেন, অসমর্থিত সূত্র থেকে শুনেছেন, ইন্ডাস্ট্রি থেকে তাঁর স্বামীর (প্রয়াত) ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে; এই টাকা তিন দিনের মধ্যে তিনি ফিরিয়ে দিতে চান, কারণ আমজাদ একজন ভালো মানুষ ছিলেন। আমার মা স্পষ্ট প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বিষয়টি। বলেছিলেন যে তার স্বামী কখনই আন্ডারওয়ার্ল্ডের কাছ থেকে সাহায্য নেননি। আমার মা সীমাব এবং আমার বোন আহলামের জীবন সাজিয়েগুছিয়ে তুলেছিলেন। সেই সময় তিনি শক্ত হাতে না ধরলে, আমরা রাজপথে থাকতাম। তিনি নির্মাণ ব্যবসায় নেমে পড়েন।’