প্রয়াত কিংবদন্তি গায়িকা অসীমা মুখোপাধ্যায়। ২০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার ঘুমের মধ্যেই না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন এই জনপ্রিয় গায়িকা। নিজ বাস ভবনেই মৃত্যু হয়েছে অসীমাদেবীর। তাঁর সুরে চৌরঙ্গী সিনেমার জন্য ‘বড় একা লাগে এই আঁধারে’ এখনও জনপ্রিয় সংগীতপ্রেমীদের মধ্যে। মহানায়ক উত্তম কুমার তাঁকে ‘দিদি’ বলে ডাকতেন। নিতেন ভাইফোঁটাও। অসীমা মুখোপাধ্যায়ের আরেক পরিচয় তিনি অভিনেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী।
অসীমাদেবীর পরিবারের সঙ্গে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হলে, তাঁরা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। জানালেন, খুব ভোরেই মারা যান এই কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব। গত কয়েকমাস ধরে অসুস্থ ছিলেন অসীমাদেবী। পারকিনসন্সের সমস্যায় ভুগছিলেন। কার্ডিয়াক অ্য়ারেস্ট কেড়ে নিল টলিউডের এই উজ্জ্বল নক্ষত্রের প্রাণ। চলে গেলেন তিনি চির ঘুমের দেশে।
আরও পড়ুন: ডাবেও নতুনত্ব, মেনুতে গ্লুটেন-সুগার ফ্রি খাবার, সেজে উঠল জ্যাকি-রকুলের বিয়েবাড়ি
গায়িকা, সুরকার, প্রযোজক হিসেবে দীর্ঘসময় কাজ করেছেন অসীমা মুখোপাধ্যায়। বিয়ের আগের উপাধি ছিল ভট্টাচার্য। অসীমাদেবীর প্রযোজনাতেই উত্তম কুমার কাজ করেছেন 'চৌরঙ্গী', 'মেমসাহেব', 'বাঘবন্দী খেলা'র মতো কালজয়ী ছবিতে। সেই সূত্রেই সম্পর্ক পৌঁছে গিয়েছিল পারিবারিক স্তরে। নিজের কোনও বোন ছিল না মহানায়কের। তাই প্রতিবছর নিয়ম মেনে নিতেন ফোঁটা।
আরও পড়ুন: ‘ডিয়ার গোল্ড ডিগার…’, জেলে বসেই ‘বেবি বু’ জ্যাকলিনকে ‘ভালোবাসার’ চিঠি সুকেশের
এক সাক্ষাৎকারে বছরকয়েক আগে অসীমাদেবী জানিয়েছিলেন, ভাইফোঁটার দিন সব উপকরণ গুছিয়ে উত্তমকুমার-সুপ্রিয়া দেবীর ময়রা স্ট্রিটের বাড়িতে চলে যেতেন। মোট চার বছর দিয়েছিলেন ফোঁটা। এত বড় ব্যক্তিত্ব, কিন্তু ফোঁটা নিয়ে শিশুর মতোই ছটফট করতেন। বয়সে বড় হয়েও, অসীমাকে ডাকতেন ‘অসীমাদি’ বলে। উত্তম কুমার একবার উপহারে দিয়েছিলেন 'আমার আমি' নামের জীবনী বইটি। আর তারপর শাড়িই দিতেন প্রতি বছর।
আরও পড়ুন: ৫৫ দিনে ১১ কেজি! প্রসবোত্তর ওজন কমিয়ে চমক দিলেন রুবিনা, কীভাবে হলেন এত রোগা
অভিনেতা পার্থ মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী অসীমাদেবী। ধন্যি মেয়ে, অগ্নীশ্বর, বাঘ বন্দি খেলা, আমার পৃথিবী -র মতো জনপ্রিয় করেছেন পার্থবাবু। উত্তম কুমারের সঙ্গে কাজ করেছেন একাধিক ছবিতে। বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে মারা যান ২০১৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর ৭০ বছর বয়সে।
গত শনিবার শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন ‘চৌরঙ্গী’ ছবির অভিনেত্রী অঞ্জনা ভৌমিক। আর সেই ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন অসীমাদেবী। একই মাসে, একই ছবির দুই তারকা চলে গেলেন পরপারে।