বলিউডের মাদকযোগ নিয়ে গত কয়েকদিনে সরগরম দেশ। বলিউডের মাদকযোদের চর্চায় উত্তপ্ত সংসদের বাদল অধিবেশনও। সোমবার লোকসভায় সুশান্ত মামলায় এনসিবির পদক্ষেপের প্রশংসা করে গোরক্ষপুরের বিজেপি সাংসদ দাবি করেন পাকিস্তান,চিন থেকে ড্রাগস ঢুকছে দেশে, যা দেশের যুবা প্রজন্মকে নষ্ট করে দিচ্ছে। বলিউডে কীভাবে মাদকের জাল বিস্তার হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা আবশ্যক বলেন তিনি। এর পালটা জবাব দিয়ে আজ, রাজ্যসভায় বলিউডের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন জয়া বচ্চন।
এর মাঝে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে মঙ্গলবার পার্লামেন্টে জানানো হল এখনও পর্যন্ত ড্রাগ মাফিয়াদের সঙ্গে বলিউডের প্রত্যক্ষ যোগসাজশের কোনও প্রমাণ মেলেনি, তবে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো তদন্ত চালাচ্ছে।
গত ২৮ অগস্ট কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা রিয়া চক্রবর্তী ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করে।সুশান্ত মামলায় তিন নম্বর কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসাবে তদন্ত শুরু করে এনসিবি। এর আগে থেকেই ইডি এবং সিবিআই সুশান্তের মৃত্যু রহস্যের দুটি পৃথক মামলার তদন্ত করছে। মূলত ইডি রিয়ার ফোনর ডেটা পুনরুদ্ধার করে বেশ কিছু মুছে ফেলা হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট উদ্ধার করে। যেখানে দেখা যায় মাদকচক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন রিয়া, তাঁর ভাই শৌভিক, সুশান্তের হাউজ ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডা এবং পরিচারক দীপেশ সাওয়ান্ত।
এদেরকে জেরা করেই মুম্বই ও গোয়ার একাধিক জায়গায় হানা দেয় এনসিবি। ইতিমধ্যেই মুম্বইয়ের একাধিক মাদক পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। এই মামলায় ইতিমধ্যেই প্রায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে এনসিবি। টানা দুদিন জেরা করবার পর গত ৮ সেপ্টেম্বর তৃতীয় দিন জেরার সময় রিয়া চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে এনসিবি। সংস্থার দাবি মেনে তাঁকে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
লোক সভায় দেওয়া লিখিত জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জে কিষাণ রেড্ডি জানান, করোনাভাইরাস লকডাউনের সময় এনসিবির হাতে এমন কোনও তথ্য হাতে আসেনি যে বলিউড ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ীদের কোনও প্রত্যক্ষ আঁতাত রয়েছে। কিন্তু গত ২৮ শে অগস্ট মুম্বইতে এনসিবির জোনাল অফিসে একটি মামলা দায়ের হয়েছে'।
গাঁজা, হাশিস, টেট্রা হাইড্রো ক্যানাবিনোল এবং লাইসেরজিক অ্যাসিড ডে-ইথাইলামিডের মতো নিষিদ্ধ মাদক সেই মামলায় বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, জানায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এদিন কেরালার কংগ্রেস সাংদস কে সুধাকরণের প্রশ্নের উত্তের এই জবাব জানায়। সুধাকরণ জানতে চেয়েছিলেন কোভিড-১৯ এর এই সময়ে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এবং তাঁর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে ড্রাগ মাফিয়াদের যোগ নিয়ে সরকার কি বিস্তারিত তদন্ত করেছে?
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো।
ম্যাজিস্ট্রেট ও সেশন আদালতে ইতিমধ্যেই খারিজ হয়ে গিয়েছে রিয়ার জামিনের আর্জি। এখনও পর্যন্ত বম্বে হাইকোর্টে রিয়ার জামিনের আবেদন দাখিল করবার কোনও তথ্য জানাননি তাঁর আইনজীবী সতীশ মানেসিন্ধে।