একটা সময় ভীষণই পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি ছোট পর্দার। একাধিক ধারাবাহিকে লিড রোলে কাজ করেছেন। কিন্তু বিয়ের পর আচমকাই যেন তিনি ডুমুরের ফুল হয়ে যান। কার কথা বলছি? ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’ ধারাবাহিক খ্যাত দেবী তারা ওরফে নবনীতা দাসের কথা। জিতু কামালের সঙ্গে বিয়ের পর থেকেই তিনি যেন এক প্রকার আড়ালে চলে গিয়েছিলেন সবার। তেমন আর কোনও প্রজেক্টে দেখা যায়নি। তবে আবারও সমস্ত বিরতি কাটিয়ে তিনি পর্দায় ফিরছেন। শুরু হচ্ছে তাঁর নতুন ধারাবাহিক বিয়ের ফুল। কিন্তু এতদিন তাঁকে দেখা যায়নি কেন, এর নেপথ্যে আছে কোন বিশেষ কারণ জানালেন অভিনেত্রী নিজেই।
এতদিন পর সিরিয়ালে যে ফিরছেন, মাঝে কবছর তাঁকে দেখা যায়নি এটার কি কোনও বিশেষ কারণ আছে? উত্তরে অভিনেত্রী আনন্দবাজারকে বলেন, 'চ্যানেলের সঙ্গে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ ছিলেন আমি। সেই চুক্তি শেষ হওয়ার পরই আমি আবার কাজে ফিরছি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত চ্যানেলের সঙ্গে চুক্তি ছিল আমার। ওরাই ঠিক করত আমায় কোন চরিত্রে মানাবে কীসে মানাবে না। সেই চুক্তি শেষ হওয়ার পরই এই ধারাবাহিকের কলির চরিত্রের অফার আমার কাছে আসে, আর আমি তাতে হ্যাঁ বলে দিই।'
কিন্তু সব ছেড়ে কলির মতো চরিত্র কেন? এটা বাছার কি বিশেষ কোনও কারণ আছে? উত্তরে জিতু ঘরণী বলেন, 'আমায় এর আগে সবাই রোম্যান্টিক বা পৌরাণিক কোনও চরিত্রে দেখেছেন। কিন্তু কমেডি চরিত্রে এই প্রথম কাজ করছি। এখন কাজ করতে গিয়ে বুঝছি বিষয়টা বেশ কঠিন। আর তাছাড়া এই সিরিয়ালে কাজ করার অন্যতম কারণ হল আমাদের টিম। এখানে আছেন দুলাল লাহিড়ি, রিমঝিম মিত্রের মতো সমস্ত অভিনেতারা। ওঁদের থেকে অনেক কিছু শিখছি। ফলে আমার জন্য বেশ সুবিধাই হয়েছে।' তিনি নিজের এই চরিত্র প্রসঙ্গে বলেন, 'এছাড়া মূলত দেখা যায় ছেলের মেয়ের পিছনে ঘোরে। তবে এই চরিত্রটা একদমই উল্টো।'
সিরিয়ালে নিজেই মনের কথা জানালেও বাস্তবে কর কাকে মনের কথা জানিয়েছিলেন আগে? এই বিষয়ে নবনীতা জানান, 'সিরিয়ালের সঙ্গে বেশ মিল আছে আমার। কলি যেমন স্পষ্টবক্তা, আমিও তাই। জিতুকে আমিই প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলাম।'
জিতু বড় পর্দায় চলে গিয়েছেন, নবনীতাকে কবে দেখা যাবে? এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর সাফ উত্তর 'সব কিছুর সময় থাকে। জিতু পাঁচ বছর আগে চেষ্টা করেছিল পারেনি। এখন পেরেছে। আমিও নিজেকে প্রস্তুত করছি। আগে প্রস্তুতি দরকার আমার।'
দুজনেই এখন চরম ব্যস্ত কাজ নিয়ে, কতটা কথা হয় একে অন্যের সঙ্গে নিজেদের কাজ প্রজেক্ট নিয়ে? 'জিতুর ডেট আমি পাই না। ওর আর আমার কথা ভীষণই কম হয়। গত তিন চার মাস তো সেভাবে কথাই হয়নি। আসলে আমাদের দুজনের রুটিনে বেশ ফারাক আছে। সিরিয়ালের নিজস্ব একটা নিয়ম থাকে। কিন্তু সিনেমা মানেই রোজ কিছু না কিছু কাজ। মাঝে মাঝে তো বাড়িতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা মিটিং চলে' উত্তর অভিনেত্রীর।
‘অপরাজিত’ ছবির পর থেকে জিতুকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। বরং টলিউডের অন্যতম প্রতিভাবান এবং চর্চিত অভিনেতা তিনি এখন। নিজেও নিজ ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত নবনীতা। এই বিষয় নিয়ে কখনও নিজেদের মধ্যে ইগোর সমস্যা দেখা যায়নি? উত্তরে নবনীতা বলেন, 'আমাদের সমীকরণ আলাদা। অন্য জুটিদের সমীকরণ আলাদা। তাছাড়া এই ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকেই এমন আছেন যাঁরা আদতে স্বামী স্ত্রী। আমি জিতুর থেকে ১০ বছরের ছোট, কাজের ক্ষেত্রেও সিনিয়র। ফলে ইগোর কথা এখানে আসছেই না। ওর উন্নতি হলে আমি হিংসে করব কেন, বা উল্টো হবে কেন? ও আমার থেকে অনেক বেশি পরিশ্রম করে। আমরা দুজন কাজের বাইরেও নিজেদের জগৎ নিয়ে থাকি। তাই এসব ভাবার সময় নেই।'