নিজের জীবনের কোনও সিদ্ধান্তই পরিকল্পনা মাফিক ছিল না, সবটাই ভগবানের ‘মাস্টার প্ল্যান’ এমনটাই মনে করেন নীনা গুপ্তা। অর্থাভাব, বিয়ের আগেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার 'কলঙ্ক', তার পর মেয়েকে বড় করে তোলা— জীবনের লড়াইগুলি একাই লড়েছেন নীনা গুপ্তা। নীনা গুপ্তার ব্যক্তিগত জীবন সবসময়ই থেকেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ভারতীয় সমাজে বিয়ে ছাড়া মা হওয়া নিয়ে যেখানে আজও ছুৎমার্গ রয়েছে, সেখানে আশির দশকে এই সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ‘স্বাধীনচেতা’ নীনা গুপ্তা। এর মধ্যে কম লড়াই করতে হয়নি তাঁকে।
আশির দশকে ক্যরিবিয়ান ক্রিকেট তারকা ভিভ রিচার্ডসের সঙ্গে গভীর প্রেম সম্পর্ক ছিল নীনা গুপ্তার। তাঁদের বহুচর্চিত রোম্যান্স সেই সময় সংবাদ শিরোনামে আসত হামেশাই। ১৯৮৯ সালে তাঁদের কন্যা মাসাবার জন্ম হয়। তবে কোনওদিনই নীনা গুপ্তাকে বিয়ে করেননি ভিভ রিচার্সড। স্ত্রী মারিয়মকে ডিভোর্স দিতে রাজি হননি ভিভ। তাই ‘সিঙ্গল মম' হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নীনা।
সম্প্রতি নবভারত টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানান, ‘আমি কোনও কিছুই পরিকল্পনামাফিক করিনি। আমি এমন একজনের প্রেমে পড়েছিলাম যার সঙ্গে আমি থাকতে পারিনি অথচ তাঁর সন্তানের মা হয়েছি। আমি সাহসী কিছু একটা করে দেখাব এমন কিছু আমার পরিকল্পনায় ছিল না। আমি শুধু পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি যা ভগবান আমার সামনে রেখেছেন’।
অভিনেত্রী আরও যোগ করেন, ‘আমি কোনওদিন হাল ছাড়িনি। আমি নিজের সিদ্ধান্তে অটল থেকেছি। আমি কোনওদিন কারুর থেকে আর্থিক বা মানসিক সাহায্য নিইনি। আমি ভুগেছি, যন্ত্রণা সহ্য করেছি আবার মজাও করেছি। আর কী করতাম? আমি কাঁদতে পারতাম হয়ত অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারতাম। আবার কেঁদে কেঁদে গোটা জীবন কাটিয়ে দিতে পারতাম। আমি কোনও সাহসিকতার কর্মকাণ্ড শুরু করতে চাইনি, চেয়েছি ভগবান আমার ঝুলিতে যা কিছু দিয়েছেন তা স্বীকার করে নিতে এবং এগিয়ে চলতে’।
সিঙ্গল মাদার হওয়ার নীনার সিদ্ধান্তের সেই সময় অনেকে প্রশংসা করেছিল,অনেকে আবার সমালোচনাও করেছিল। এর আগে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, 'বিয়ে না করে মা হয়েছিলাম বলে বলিউডে কাজ পেতে অসুবিধা হয়েছে'। ২০০৭ সালে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বিবেক মেহরাকে বিয়ে করেন নীনা গুপ্তা। তখন মাসাবার বয়স ১৮ বছর।
নীনা গুপ্তাকে শেষ দেখা গিয়েছে বিকাশ বহেলের ‘গুডবাই’ ছবিতে। আগামিতে তাঁর দেখা মিলবে ‘উঁচাই’ ছবিতে। চলতি সপ্তাহেই মুক্তি পাবে এই ছবি।