জীবনে হয়ত আর কলম ধরতে পারবেন না ‘বুদ্ধ অফ সার্বিয়া’র স্রষ্টা! অস্কার মনোনীত চিত্রনাট্যকার তথা ঔপন্যাসিক হানিফ কুরেশি ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার। ১২ দিন আগে পড়ে গিয়ে গুরুতর চোট পান লেখক, পরবর্তীতে 'আংশিক পঙ্গুত্ব' ঘিরে ধরেছে তাঁকে। এর জেরেই ভবিষ্যতে হয়ত আর কোনওদিন কলম না ধরতে পারার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এই পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক। কুরেশির বাবার শিকড় জুড়ে রয়েছে ভারতের সঙ্গে, মাদ্রাসে জন্ম তাঁর। পরবর্তীতে পাকিস্তানে চলে যায় পরিবার।
টুইট বার্তায় কুরেশি লেখেন, একটি ফুটবল ম্যাচ দেখবার পর তাঁর ঘুমন্ত লাগছিল। এরপর দু পায়ের মাঝে মাথা গুঁজে পড়ে যান তিনি। এরপর যখন জ্ঞান ফেরে তখন উপলব্ধি করেন চতুর্দিক রক্তে ভেসে যাচ্ছে, এবং তাঁর ঘাড়টি বেঁকে রয়েছে। পাশে বসে স্ত্রী কান্নাকাটি জুড়েছে। ঘটনাটি গত ২৬শে ডিসেম্বরের।
পরবর্তী অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর। টুইটারে হানিফ কুরেশি আরও জানান, ‘সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতি আরও খারাপ এবং জটিল’ হয়ে উঠেছে। লেখকের কথায়, ‘একটা সময় ভেবেছিলাম আর মাত্র কয়েকটা মুহূর্তই শ্বাস টিকবে'। জীবনরক্ষার জন্য স্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন হানিফ কুরেশি। আপতত রোমের জেমেল্লি ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হানিফ কুরেশি। আপতত নিজের হাত-পা কিছুই নাড়তে পারছেন না লেখক। এই ‘পঙ্গুত্ব’-এর দশার জেরে খুবই অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে তাঁর, তিনি লেখেন- ‘আমি এখন খুবই লজ্জাজনক, অপমানজক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, যেন অপরের উপর বোঝা’।
কুরেশির টুইট থেকে স্পষ্ট মেরুদণ্ডে গুরুতর চোট পেয়েছেন তিনি। এর জেরেই স্নায়ুতন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করছে না। লেখকের কথায়, ইতিমধ্যেই তাঁর শিরদাঁড়ার অস্ত্রোপচার হয়েছে এবং খুব শীঘ্রই ফিজিওথেরাপি শুরু হবে'।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম চর্চিত ঔপন্যাসিক হানিফ কুরেশি। পনোগ্রাফি লেখক হিসাবে সত্তরের দশকে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি, পরবর্তীতে নিজ দক্ষতায় হয়ে উঠেছেন হলিউডের সফল চিত্রনাট্যকার এবং অন্যতম সফল ব্রিটিশ লেখক। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে অজস্র সম্মান। ‘মাই বিউটিফুল লন্ড্রেট’, ছবির চিত্রনাট্যের জন্য অস্কারে মনোনয়ন পেয়েছিলেন কুরেশি। ব্যক্তিগত জীবনও কম রোমাঞ্চকর নয়। বাই-সেক্সুয়াল এই লেখকের ব্যক্তিগত জীবনের ওঠাপড়া হামেশাই থেকেছে চর্চায়।
ভবিষ্যতে কলম ধরতে না পারার আশঙ্কা প্রকাশ করে অনুরাগীদের কাছে সাহায্য চেয়েছেন হানিফ কুরেশি। সন্ধান চেয়েছেন এমন ‘ভয়েস অ্য়াস্টিটেড’ হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের যা তাঁকে ফের ‘দেখতে, লিখতে এবং কাজ শুরু করতে সাহায্য করবে’।