'কিঁউকি শাস ভি কভি বহু থি'র শ্য়ুটিং থেকে ব্যক্তিগত জীবন, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নানান বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন স্মৃতি ইরানি। জানিয়েছেন, ছোট থেকে অনেক কষ্ট করে বড় হতে হয়েছে তাঁকে। চোখের সামনে দেখেছেন বাবা-মায়ের লড়াই, তাঁদের কষ্ট।
স্মৃতি জানান, তাঁর বাবা-মা আলাদা হয়ে গিয়েছেন, এটা বলতে তাঁর ৪০ বছর সময় লেগে গিয়েছে। স্মৃতির কথায়, ‘সেসময়টা তাঁদের ছোট করে দেখা হত। অথচ আমি জানি, ওঁদের কাছে এটা কতটা কঠিন ছিল, পকেটে মাত্র ১০০ টাকা নিয়ে ওঁরা আমাদের দেখভাল করত। আমার বাবা আর্মি ক্লাবের বাইরে বই বিক্রি করতেন। আমিও বাবার সঙ্গে বসতাম। আর আমার মা বাড়ি বাড়ি মশলা বিক্রি করতেন। আমার মা ছিলেন বাঙালি ব্রাহ্মণ পরিবারের আর বাবা পাঞ্জাবি। মা স্নাতক ছিলেন, কিন্তু বাবা বিশেষ পড়াশোনা করেননি। হতে পারে সেকারণেই হয়ত ওদের মধ্যে সমস্যা তৈরি হয়েছিল।’

স্মৃতি ইরানি ও তাঁর বাবা-মা
স্মৃতি জানান, ‘আমার বাবা-মা পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়েই বিয়ে করেছিলেন। ওঁরা যখন বিয়ে করেন, তখন সম্বল ছিল মাত্র ১৫০ টাকা। আমার মনে আছে গোয়ালঘরের উপরের একটি ঘরে আমরা থাকতাম। আমার জন্ম হয় লেডি হার্ডিঞ্জ হাসপাতালে। পরে আমরা গুরগাঁও-এর একটি বাড়িতে চলে যাই। সেটা তাও সাশ্রয়ী ছিল। আমার মনে আছে ৭ বছর বয়স পর্যন্ত আমি গুরগাঁও-এর বাড়িতে ছিলাম। ওই বাড়ির একটি ছবিই আমার কাছে আছে, একটা সাদা ফ্রক পরেছিলাম, মাথায় ছিল একটা পার্টি ক্যাপ আর কপালে বিন্দি। আমার মনে আছে, আমি ও বোন বসে কালি ডাল (কালো ছোলার ডাল) খাচ্ছি। মা একটা হাতে টানা রিক্স থামিয়ে বললেন, তাড়াতাড়ি খাও, আমাদের দিল্লি চলে যেতে হবে। তারপর জিনিসপত্র রিক্সায় তুললেন। সেই দৃশ্যটা আমার কাছে সিনেমার মতো ছিল। তারপর থেকে আমরা আর কখনও কালি ডাল খাই না। আর আমাদের খুব কম টাকা পয়সার মধ্যে জীবন চালাতে হয়েছিল। আমার মাকে বলা হত, এর পরেরটা ছেলে হবে। অথচ মা আমাদের বোনেদের টানতেন। মা জানিয়েদেন আমার জন্য এঁরাই যথেষ্ঠ। এরপরই মা সম্পর্কে ইতি টানেন।’
স্মৃতি জানান, ‘আমার মা সারাজীবন আমায় এবং বোনেদের নিয়ে ভাড়া বাড়িতে জীবন কাটিয়েছেন। মায়ের শেষ ইচ্ছা ছিল, মৃত্যু যেন তাঁর নিজের বাড়িতে হয়। পরে রাজীনিতিতে আসার পর আমি মায়ের জন্য একটা বাড়ি কিনি। তারপরেও মা ১ টাকা করে আমায় ভাড়া হিসাবে দিতেন, যাতে আত্মসম্মান বজায় থাকে। তবে একটা বিষয় আমায় শান্তি দেয়, যে মায়ের মৃত্যু ভাড়া বাড়িতে হয়নি, যেটা মা সবসময় চাইতেন।’