মোর্দীর ডাকে গত ২২ মার্চ জনতা কার্ফুতে শামিল হয়েছিল গোটা দেশ। করোনা সংক্রমনের আতঙ্কের মাঝেই জনতা কার্ফু উপেক্ষা করে শহর কলকাতায় চায়ের দোকানে ভিড় জমিয়েছিল একদল হুজুগে বাঙালি। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিমিয়েই ভাইরাল হয়ে যায় ভিডিয়ো। যা নিয়ে শুরু হয় ট্রোল, মিম।
সাদামাটা জামাকাপড়, ক্লান্ত চাহনি এবং গালভর্তি হাসি নিয়েো এক মাঝবয়সী কাকুর মুখে শোনা যায় একটি লাইন 'আমরা কি চা খাবো না? চা খাব না আমরা?' এত মিষ্টিভাবে কেউ কোনদিন চা খাওয়ার কথা বলেছেন কিনা ধন্দে পড়েন নেটিজেনরা! নিমেষেই তিনি হয়ে যান চা কাকু। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেমাস হাওয়া সেই চা কাকুর ব্যক্তিগত জীবনের করুণ ছবিটাও বেরিয়ে আসে এই সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরেই। জানা যায়, ব্যক্তির নাম মৃদুল দেব। পেশায় দিনমজুর মৃদুলবাবু যাদবপুরের বাসিন্দা। রাজমিস্ত্রীর সহকারী হিসাবে কাজ করেন লকডাউনের জেরে কাজ বন্ধ, তাই বিরাট আর্থিক সংকটে তাঁর পরিবার।
দিনকয়েক ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই গোটা বিষয় নিয়ে যাদবপুরের সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করছিলেন নেটিজেনরা। অবশেষে শনিবার জানা গেল, মৃদুলবাবুর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ। এদিন নিজের আপ্ত সহায়ক,অনিবার্ণ ভট্টাচার্যের মাধ্যমে মৃদুলবাবুর বাড়িতে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেন মিমি। তবে শুধু লকডাউনে নয় ভবিষ্যতেও যে কোন রকম অসুবিধায় মৃদুল বাবু ও তাঁর পরিবারের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন মিমি চক্রবর্তী। মিমি জানিয়েছেন, 'বিষয়টি সামনে আসার পর থেকেই মৃদুল দেবের ঠিকানা খুঁজে বার করার চেষ্টা করছিল আমার টিম, অবশেষে আজ তাঁরা মৃদুলবাবুর বাড়ি পৌঁছোয়, ভবিষ্যতেও যে কোনও অসুবিধেতে আমাকে পাশে পাবেন মৃদুলবাবু'।
জানা গিয়েছে, মৃদুল দেবের ছেলের পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছেন মিমি। এদিন ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে নেটিজেনদের প্রিয় চা কাকুর সঙ্গে কথাও বললেন এই তারকা সাংসদ। বলেন, 'যখনই কিছু দরকার পড়বে আমার লোককে ফোন করবেন, তাঁরা এসে পৌঁছে দিয়ে যাবে'। মৃদুল দেবের শরীর ভালো আছে কিনা সেই খোঁজখবর নেন সাংসদ। চা-প্রেমী মানুষটার জন্য চায়ের একটা স্পেশ্যাল প্যাকেটও পাঠিয়েছেন মিমি। মৃদলবাবুও হাসি মুখে সাংসদকে কথা দিয়েছেন -'লকডাউনে ঘরে বসেই চা খাব'। আবদার একটাই 'ছেলেটার যদি একটা কাজের ব্যবস্থা হয়...'। যাদবপুরের সাংসদ নিশ্চয় চা কাকু'র এই আর্জি মেনে নেবেন, আশাবাদী নেটিজেনরা।