দ্য কাশ্মীর ফাইলসের অভাবনীয় সাফলের পর ‘দ্য ভ্যাক্সিন ওয়ার’ নিয়ে হাজির হয়েছেন জাতীয় পুরস্কার-প্রাপ্ত পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। মঙ্গলবার প্রকাশ্যে এল ছবির ট্রেলার। যাতে দেখা মিলল নানা পাটেকর, অনুপম খের, রাইমা সেন, পল্লবী জোশি ও সপ্তমী গৌড়াকে মুখ্য চরিত্রে।
করোনা মহামারীর সময় বিদেশের বড় বড় শক্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সময়ের মধ্যে কোভিড ভ্যাক্সিন বানানো নিয়ে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের লড়াই নিয়েই সিনেমা ‘দ্য ভ্যাক্সিন ওয়ার’। BBV152 ভ্যাক্সিন তৈরির জার্নিই দেখানো হয়েছে এই সিনেমায়, যা কোভ্যাক্সিন নামেও পরিচিত। এটি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির সঙ্গে অংশীদারিত্বে ভারত বায়োটেক দ্বারা তৈরি হয়েছিল।
ট্রেলারে দেখানো হয়েছে কীভাবে ভারতের একদল বিজ্ঞানী নানা চাপের কাছে মাথা না নুইয়ে ২৪ ঘণ্টা ধরে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়ার মতো একটি ভ্যাকসিন তৈরি করতে। ভারতের প্রথম বায়ো সায়েন্স সিনেমা বানালেন বিবেক।
ট্রেলারের শুরুতেই সাদা ব্র্যাকগ্রাউন্ডে লেখা ফুটে উঠল, ‘কেবল বিজ্ঞানই এই যুদ্ধে জয়ী হতে পারে’। ট্রেলার যত এগোয় দেখা যায় করোনা ভাইরাস নিয়ে ভয় গ্রাস করছে মানুষকে। তবে বদ্ধ পরিকর একদল বিজ্ঞানী। যদিও তাঁরাও মাঝেমাঝে ভেঙে পড়ে মানসিক ভাবে। নিজের দলকে উদ্বুদ্ধ করতে নানার চরিত্রটি বলে ওঠে, ‘এটি একটি যুদ্ধ এবং আমরা সবাই সৈনিক। আজ থেকে আমাদের অর্জুনের মতো শুধু মাছের চোখ দেখতে হবে।’
সিনেমায় রাইমাকে দেখা গেল সাংবাদিকের চরিত্রে। যে চায় দেশের বিজ্ঞানীদের মনোবল ভেঙে দিয়ে, বিদেশি শক্তির হাতেই করোনার টিকার ক্ষমতা তুলে দিতে। দ্য ভ্যাক্সিন ওয়ার একইসঙ্গে হিন্দি, ইংরেজি, তেলেগু, তামিল, মালায়লাম, কন্নড়, ভোজপুরি, পাঞ্জাবি, গুজরাটি, মারাঠি এবং বাংলা-সহ ১০টি ভাষায় ২৮ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেতে চলেছে।
বিবেকের এর আগের ছবি কাশ্মীর ফাইলস মুক্তি পায় ২০২২ সালে। করোনা পরবর্তী সময়ে যখন বলিউড সিনেমা একপ্রকার ধুঁকছিল বক্স অফিসে, সেই সময় প্রায় ২৫০ কোটির ব্যবসা করেছিল এই সিনেমাটি। একসময় ভোরের শো-ও হাউজফুল হত কাশ্মীর ফাইলসের। চলতি বছরে সিনেমাটি নার্গিস দত্ত সেরা চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছে জাতীয় সংহতি রক্ষার জন্য। যাতে প্রতিক্রিয়া দিয়ে বিবেক জানিয়েছিলেন, 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' কেবল একটি সিনেমা নয়, বরং কাশ্মীরের সেই সমস্ত মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে যারা ১৯৯০ সালে নিজের মাটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল। জাতীয় পুরস্কারের সাফল্য তিনি উৎসর্গ করেন ভারতের সেই সব মানুষদের যারা সন্ত্রাসবাদের শিকার। বিশেষ করে উপত্যকা ছাড়া সেই কাশ্মীরি পণ্ডিতদের।
এর আগে ‘দ্য ভ্যাক্সিন ওয়ার’ তৈরি প্রসঙ্গে বিবেক জানিয়েছিলেন, ‘করোনার লকডাউনের সময় ICMR ও NIV-এর বিজ্ঞানীদের উপর গবেষণা করছিলাম। বুঝতে পারি কীভাবে এই মানুষগুলো শুধু বিদেশী সংস্থাগুলির সঙ্গে নয়, এমনকী আমাদের নিজেদের লোকেদের সঙ্গেও যুদ্ধ করেছিল। আমরা দ্রুততম, সস্তা এবং নিরাপদ ভ্যাকসিন তৈরি করে পরাশক্তির বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছি। আমি তখনই ভেবে রেখেছিলাম এই গল্পটি বলা উচিত যাতে প্রত্যেক ভারতীয় তাদের দেশ নিয়ে গর্ব অনুভব করতে পারে।’