করোনা সংক্রমণের হার শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে কম। এমনই বলছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু তার মধ্যেও যে একেবারে কেউ আক্রান্ত হচ্ছে না, তা নয়। যেমন ঘটেছিল হায়দরাবাদের সৌর্য্যের ক্ষেত্রে। শুধু কোভিডে আক্রান্ত হওয়াই নয়, ১২ বছরের কিশোরের অবস্থার ভয়ানক অবনতি হয়। তার পরেও তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করতে পেরেছেন চিকিৎসকরা। কীভাবে তা সম্ভব হল? সেটাই এখন গোটা পৃথিবীর চিকিৎসকদের আলোচনার বিষয়।
কোভিড সংক্রমণের ফলে কোভিড নিউমোনিয়াই শুধু নয়, মাল্টি অর্গ্যান ইনফেকশনের মতো সমস্যা দেখা দেয় এই কিশোরের। অন্য়ত্র প্রাথমিক চিকিৎসা হওয়ার পরে উত্তরপ্রদেশের এই কিশোরকে নিয়ে আসা হয় হায়দরাবাদের কেআইএমএস হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা Extracorporeal membrane oxygenation (ECMO) পদ্ধতিতে তার চিকিৎসা শুরু করেন। সেই চিকিৎসা চলে টানা ৬৫ দিন।
কোভিডের চিকিৎসায় অনেককেই এই একমো-র সাহায্য নিতে হয়। কিন্তু শিশু বা কিশোর-কিশোরীদের এই পদ্ধতির চিকিৎসার খুব একটা দরকার পড়ে না। পড়লেও তা খুব লম্ব সময়ের জন্য নয়। সৌর্য্যের ঘটনা সব রেকর্ডই ভেঙে দিয়েছে। অপ্রাপ্তবয়স্ক কাউকে এই প্রথম বার ৬৫ দিন একমো-তে রেখে কোভিডের চিকিৎসা করা হল।
চিকিৎসকদলের সদস্য সন্দীপ আতাওয়ার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সৌর্য্যকে যখন নিয়ে আসা হয়, তার শরীরে সংক্রমণ অনেক দূর ছড়িয়ে গিয়েছিল। প্রাথমিক অবস্থায় সংক্রমণ শ্বাসযন্ত্রে সীমাবদ্ধ থাকলেও, পরে তা রক্তের মাধ্যমে শরীরের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। সেটাই মারাত্মক হয়ে ওঠে। সন্দীপ আতাওয়ারের কথায়, একমো পদ্ধতির চিকিৎসা অনেককেই এভাবে সুস্থ করে তুলতে পারছে।
সৌর্য্যর মা রেণু সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রায় ৪০ দিন টানা চিকিৎসা চলার পর চিকিৎসকরা জানান, সৌর্য্য সুস্থ হচ্ছে। তার আগে পর্যন্ত গোটা পরিবার আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটিয়েছে।
তবে চিকিৎসকদের এই সাফল্য আগামী দিন শুধু কোভিডের নয়, শ্বাসযন্ত্রের অন্য সমস্যা সমাধানেও পথ দেখাবে, এমনই মনে করছে চিকিৎসক মহল।