ভারতের অধিকাংশ রাজ্যেই ভালো মানের জল পাওয়া যায় না। অনেক রাজ্য তো গ্রীষ্মের মাসগুলোতে কঠিন জলকষ্টে ভোগে। দূষিত, কাদা জল খেয়ে থাকেন অনেকেই। এমন অবস্থায় আরও একটি ভয়াবহ তথ্য প্রকাশ্যে এল। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভারতের অধিকাংশ নাগরিক দূষিত জল পান করে থাকেন!
রাজ্যসভায় একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে জলশক্তির মন্ত্রী এমনই তথ্য জানালেন। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দেশের ২৫ রাজ্যে এবং কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের ২০৯ জেলায় ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক পাওয়া গিয়েছে। অন্যদিকে ১৮টি রাজ্যের ১৫২টি জেলায় মিলেছে ইউরেনিয়াম। ফলে দেশবাসী এখন জল খাচ্ছে না বিষ তা বোঝা দায়!
রাজ্যসভায় পেশ করা রিপোর্ট কী বলছে?
বিশ্বেশ্বর টুডু, জলশক্তির মন্ত্রী রাজ্যসভায় জানান অধিকাংশ ভারতীয়রা যে পানীয় জল খাচ্ছে তাতে ক্ষতিকর ধাতব পদার্থ মিশে রয়েছে। তাঁর পেশ করা রিপোর্ট অনুযায়ী ২১ রাজ্যের ১৭৬টি জেলায় সসা পাওয়া গিয়েছে ভূগর্ভস্থ জলে, অন্যদিকে লোহা পাওয়া গিয়েছে ২৯টি রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের ৪৯১ জেলায়। ক্যাডমিয়াম পাওয়া গিয়েছে ১১ রাজ্যের ২৯ জেলায়, ক্রোমিয়াম পাওয়া গিয়েছে ১৬ জেলার ৬২ জেলায়।
এছাড়াও এই তথ্য অনুযায়ী দেশে এমন ১১১টি জায়গা রয়েছে যেখানকার ভূগর্ভস্থ জল ভারী ধাতুর দ্বারা দূষিত। অন্যদিকে ১৪০৭৯ এলাকা লোহা, ৬৭১ এলাকা ফ্লুরাইড এবং ৮১৪ এলাকার জল আর্সেনিক দ্বারা দূষিত।
ক্ষতিকর ধাতব কী করে আমাদের ক্ষতি করতে পারে?
অতিরিক্ত পরিমাণের আর্সেনিক, ক্রোমিয়াম, ইউরেনিয়াম শরীরে প্রবেশ করলে তার ফল অত্যন্ত ভয়াবহ হবে। বেশি পরিমাণের আর্সেনিক শরীরে গেলে তা স্কিন ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে বেশি মাত্রায় লোহা শরীরে গেলে আলজাইমার রোগের কবলে পড়তে হয়। সীসা খেলে তা সোজাসুজি আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে এফেক্ট করে।
সরকারের তরফে কী কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে একাধিক প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যাতে দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার স্বচ্ছ পানীয় জল পৌঁছেয দেওয়া যায়। ২০১৯ সালে জল জীবন মিশন লঞ্চ করা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার গ্রামীণ অঞ্চলে প্রতি বাড়িতে কলের জল পৌঁছিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছে লোকসভায়। এছাড়াও ২০২১ সালের অক্টোবরে আমারও আম্রুত ২.০ প্রকল্প নিয়েছে যাতে আগামী ৫ বছরের মধ্যে দেশের সমস্ত শহরে কলের জল পৌঁছে দেওয়া যায়।