করোনাভাইরাস আক্রান্ত স্ত্রী'র চিকিৎসায় আইসিইউ বেড পেতে ঘুষ দিতে হয়েছে স্বামীকে। তা সত্ত্বেও স্ত্রী'কে বাঁচাতে পারেননি। ঘুষের পুরো টাকা না দিতে পারায় এক নার্সের রোষের মুখে পড়তে হয় আক্রান্তের স্বামীকে। তবে শেষপর্যন্ত অবশ্য হাতেনাতে ধরা পড়ে গিয়েছেন ওই নার্স। এমনই অভিযোগ উঠল রাজস্থানে। এই ঘুষ নেওয়ার চক্রের সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছেন কিনা, পুলিশ এখন তা খতিয়ে দেখছে।
রাজস্থানের একটি সরকার পরিচালিত কোভিড হাসপাতালে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এক কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়। ৫৩ বছরের কোভিড আক্রান্ত ওই মহিলার স্বামী তাঁকে আইসিইউতে ভরতি করানোর জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে হন্যে হয়ে ঘুরছিলেন। গত বুধবার থেকেই ওই মহিলার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। তখনই আক্রান্তের স্বামী খপ্পরে পড়ে যান অশোক গুর্জর নামে এক নার্সের। অশোক এক বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে সরকারি পরিচালিত রাজস্থান ইউনিভার্সিটি অফ হেলথ সায়েন্সের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিক জানান, পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ওই আক্রান্তের স্বামীর কাছ থেকে প্রথমে দেড় লাখ টাকা চান।কিন্তু শেষ পর্যন্ত এক লাখ ৩০ হাজার টাকায় আইসিইউ বেড পাইয়ে দিতে রাজি হয়ে যান।এর মধ্যে ৯৫,০০০ টাকা অগ্রিম নিয়েও নেন ওই নার্স। তদন্তকারী আধিকারিক জানান, গত শুক্রবার আক্রান্তের মৃত্যু হলে বাকি ৩৫,০০০ টাকা দেওয়ার জন্য আক্রান্তের স্বামীকে চাপ দিতে থাকেন অশোক। বারবার ফোন করে হুমকিও দিতে থাকেন।
শেষপর্যন্ত করোনা আক্রান্তের স্বামী দুর্নীতি দমন শাখায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুরো বিষয়টি শোনার পর অভিযুক্তকে ধরতে ফাঁদ পাতেন দুর্নীতি দমন শাখার অফিসাররা। গত রবিবার সন্ধ্যায় যখন অভিযুক্ত ৩৫,০০০ টাকার মধ্যে ২৩,০ টাকা নিতে আসেন, তখন তাঁকে হাতে নাতে ধরে ফেলা হয়।তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, এর আগেও এই একই ধরনের কাজ একাধিকবার করেছেন ওই ব্যক্তি।পুলিশ এখন ওই হাসপাতালে একজন চিকিৎসকের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত শুরু করেছে।ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আক্রান্তের পরিবারের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।পাশাপাশি হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।