২৬ বছরের একটি পুরনো ধর্ষণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে মুক্তি দিল এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চ। একইসঙ্গে এই মামলায় নির্যাতিতার সাক্ষ্যের ওপর প্রশ্ন তুলেছে আদালত। অবিলম্বে অভিযুক্তকে জেল থেকে মুক্তি দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি করুণেশ সিং পাওয়ারের বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: ‘রাজ্যের লজ্জা’ ধর্ষণের মামলায় পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করে মন্তব্য হাইকোর্টের
এই মামলার রায় দিতে গিয়ে বেঞ্চ সাক্ষ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। সেইসঙ্গে নির্যাতিতাকে ‘সম্মতিকারী পক্ষ’ বলে জানায় আদালত। বেঞ্চ জানায়, মেডিক্যাল রিপোর্টে কোনও প্রমাণ মেলেনি। তাছাড়া, ঘটনার সময় নির্যাতিতার বয়স ছিল ১৬ বছর। আদালতের মতে, এই বয়স সহবাস সম্পর্কে বোঝার বিষয়ে যথেষ্ট। মামলার বয়ান অনুযায়ী ১৯৯৭ সালের ১৬ জানুয়ারি মেয়েটির বাবা লখনউ পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন যে অভিযুক্ত লালা তার মেয়েকে অপহরণ করেছে। তারা কোথাও তাকে খুঁজে পাচ্ছে না। এরপর ওই বছরের ২৭ জানুয়ারি তাকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় লালার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়। বিচারের পরে, অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। পরে ওই ব্যক্তি নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান। আদালত উল্লেখ করেছে, যে নির্যাতিতা স্বেচ্ছায় অভিযুক্তের কাছ থেকে গহনা এবং ২২০০ টাকা নিয়েছিল। সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখার পর এলাহাবাদ হাইকোর্ট অভিযুক্তকে ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত করতে অস্বীকার করে।
উল্লেখ্য, এর আগে নিম্ন আদালত ওই ব্যক্তিকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল। সবকিছু খতিয়ে দেখে হাইকোর্টের বেঞ্চ উল্লেখ করেছে, যে নির্যাতিতাকে ১৩ দিন পরে উদ্ধার করা হয়েছিল। তারপরে নির্যাতিতা কোনও আশঙ্কা প্রকাশ করেননি। আদালত এও বিবেচনা করে যে চিকিৎসকদের মেডিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্টে কোনও সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি, যাতে বোঝা যায় ওই নির্যাতিতা ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। আদালত উল্লেখ করেছে, বয়ানে নির্যাতিতা উল্লেখ করেছেন তিনি স্বেচ্ছায় ওই ব্যক্তির সঙ্গে গিয়েছিলেন। এ সমস্ত কিছুর ভিত্তিতে হাইকোর্টের বেঞ্চ মনে করছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি দোষী নন। তার ভিত্তিতে তাকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। প্রসঙ্গত, ২০০০ সাল থেকে জেলে ছিল অভিযুক্ত। অবেশেষে মুক্তি পাবে সে আদালতের নির্দেশে।