কয়েকদিন আগেই জানা যায় যে মহারাষ্ট্রের একটি জেলাতেই ৮০০০ শিশু একসঙ্গে কোভিড আক্রান্ত হয়েছে। এভাবেই বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে শিশুরা কোভিডের শিকার হচ্ছে, তাতে আশঙ্কা বেড়েছে। এরই মধ্যে চিকিত্সকদের একাংশের দাবি, দেশে তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়লে আরও বেশি করে কোভিডের শিকার হবে শিশুরা। যদিও এই দাবি নিয়ে দ্বিমত রয়েছে অনেক বিশেষজ্ঞের। তবে এটা সত্যি, প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউতে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়েছে। আর তাই তৃতীয় ঢেউয়ের আগে শিশুদের নিয়ে বাড়তি চিন্তা রয়ে গিয়েছে।
যদিও কয়েকদিন আগে দিল্লিতে অবস্থিত এইমস-এ প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া দাবি করেন, এরকম কোনও পোক্ত প্রমাণ বা ইঙ্গিত মেলেনি যে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়লে তাতে আরও বেশি করে আক্রান্ত হতে পারে শিশুরা। তাঁর দাবি, করোনা সংক্রমণের প্রথম এবং দ্বিতীয় ঢেউ থেকে মেলা তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে যে সাধারণত কোভিড সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকে শিশুরা। যদিও বা তারা আক্রান্ত হয়, সেক্ষেত্রে তাদের বেশিরভাঘই উপসর্গহীন হয়ে থাকে।
এই আবহে করোনা আক্রান্তদের উপর পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এই পরিস্থিতিতে নীতি আয়োগের সদস্য ডঃ ভিকে পাল দাবি করেছেন, যে সব শিশু কোভিডে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই উপসর্গহীন। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পর্যবেক্ষণ থেকে উঠে আসা তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে প্রাথমিক ভাবে নিউমোনিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে। দ্বিতীয়ত সদ্য কোভিড থেকে সেরে ওঠা শিশুদের শরীরে দেখা দিয়েছে মাল্টি ইনফ্ল্যামেটরি সিনড্রোম। কেন্দ্রের দাবি, খুব কম কয়েকটি ক্ষেত্রে কোভিড থেকে সেরে ওঠার ৬ সপ্তাহ পর কয়েকটি শিশুর জ্বর এসেছে, বমি হয়েছে। তবে শিশুদের উপর এই সংক্রমণ মারাত্মক আকার নেয়নি।
এদিকে যেসব বিশেষজ্ঞ দাবি করছেন যে করোনা তৃতীয় ঢেউতে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হবে, তাদের কাছে এর কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই বলে দাবি করেছেন অনেক চিকিত্সকই। তবে ভয়ের কারণ একটি থাকছে, শিশুদের জন্য এখনও কোনও টিকাকরণ চালু হয়নি দেশে। প্রথম ঢেউতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছিলেন। তবে তাদের টিকাকরণ শুরু হতে চরিত্র বদলে তরুণদের উপর হামলা শুরু করে করোনা। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা। শিশুদের টিকাকরণ শুরু না হলে চরিত্র বদলে করোনা হামলা চালাতে পারে তাদের উপর। তবে এই আশঙ্কার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি বা প্রমাণ নেই। তবে এরই মাঝে শিশুদের টিকাকরণের দাবি জোরালো হয়েছে দেশে।