'শ্রমিক স্পেশ্যাল' ট্রেনে যাতায়াতের পথে মৃত্যু হয়েছে অনেক শ্রমিক এবং তাঁদের পরিজনদের। সেজন্য রেলের ট্রাইবুনালের আর্থিক অনুদানের আবেদন জানাতে পারে তাঁদের পরিবার। আবেদনের ভিত্তিতে প্রতিটি ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান ভি কে যাদব।
শুক্রবার ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, 'ক্লেমের জন্য নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া আছে এবং রেলের ক্লেমস ট্রাইবুনাল আছে। এই ধরনের ঘটনাগুলি রেলওয়ে ক্লেমস ট্রাইবুনালে পাঠানো হয় এবং প্রতিটি আলাদা আলাদা কেসের ভিত্তিতে সেই ক্লেম এবং আর্থিক অনুদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেটার জন্য একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ারও বন্দোবস্ত করা আছে।'
গত ৩০ মে ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৯ মে থেকে ২৭ মে পর্যন্ত 'শ্রমিক স্পেশ্যাল' ট্রেনে প্রায় ৮০ জনের মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছিল বলে আরপিএফের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছিল। যদিও রেলের তরফে সাফাই দেওয়া হয়েছিল, আগেভাগেই অসুস্থ থাকায় তাঁরা মারা গিয়েছিলেন।
শুক্রবার রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান জানান, মৃতের সংখ্যা চূড়ান্ত তালিকা রেলের হাতে পৌঁছায়নি। সেজন্য রাজ্যের ঘাড়ে দায় ঠেলেন তিনি। বলেন, ‘তালিকার বিষয়ে বলতে গেলে, এটা রাজ্যের বিষয়। এতগুলি রাজ্য যুক্ত আছে এবং সেই ঘটনাগুলি সামলেছে রাজ্যগুলি এবং তারাই সেই তালিকা চূড়ান্ত করবে। তাই এখনও সেই তালিকা জোগাড় হয়নি। এখনও পর্যন্ত আমরা সব রাজ্যের থেকে তথ্য পাইনি। তবে সব রাজ্যই ঘটনাগুলির দিকে নজর রেখেছে এবং তদন্ত শেষ করার পর চূড়ান্ত রিপোর্ট এলে তারা সেই তথ্য দিতে পারবে।’
এমনিতে রেলওয়ে আইনের আওতায় রেলের দুর্ঘটনায় হতাহতদের আর্থিক সাহায্য দেয় জাতীয় পরিবহন সংস্থা। ২০১৭ সালে মৃতদের ক্ষেত্রে সেই আর্থিক সাহায্যের পরিমাণ বাড়িয়ে আট লাখ টাকা করা হয়েছিল। 'অপ্রীতিকর ঘটনা' দর্শিয়ে রেলওয়ে আইনের ১২৩ ধারায় আর্থিক সাহায্য চাওয়া যেতে পারে। অন্যান্য ক্ষেত্রে আর্থিক সাহায্যের জন্য রেলওয়ে ক্লেমস ট্রাইবুনালে আবেদন করতে হয়।
বিষয়টি নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেল আধিকারিক জানান, লাইনচ্যুত বা ধাক্কা বা অন্যান্য কোনও ত্রুটির জন্য রেলের কোনও দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়। যাত্রীরা বা কোনও মানুষ ট্রেনের তলায় চাপা পড়ে বা দুর্ঘটনাবশত ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়ার মতো অপ্রীতিকর ঘটনায় সাধারণত কোনও আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয় না। তবে রেলওয়ে ক্লেমস ট্রাইবুনালে আবেদন করে আর্থিক সাহায্য পাওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।