বাংলাদেশে দুদিনের সফরে এসেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। রবিবার রাতেই তিনি ঢাকায় এসে পৌঁছান। ৩৩ বছর পর এই প্রথম কোনও ফরাসি প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করলেন। এই দিন তাঁর জন্য চমক ছিল ডিনারে। ম্যাক্রোঁর সম্মানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৈশভোজের আয়োজন করেন। ডিনারের ওয়েলকাম ড্রিঙ্কস হিসেবে আমড়ার জুস পরিবেশন করা হয়।
(আরও পড়ুন: জি-২০ সম্মেলনে নজরকাড়া সুনক-পত্নী! কোন কোন সাজে ধরা দিলেন অক্ষতা, দেখুন ছবি)
সূত্রের খবর, এই নয়া স্বাদের জুস খেয়ে খুশি হয়েছেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি। এর সঙ্গে তাঁকে দেওয়া হয় বাংলাদেশের বিখ্যাত খাবার পেঁয়াজু ও সমুচা। নৈশভোজে ১৬ রকম খাবার দিয়ে তাঁকে আপ্যায়ন করা হয়। ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পুরো আয়োজন করা হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সম্মানে আয়োজিত ডিনারে ছিল বিখ্যাত পদ্মার ইলিশ এবং কাচ্চি বিরিয়ানি।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার এই দিন জানান, অ্যাপেটাইজার হিসেবে ছিল প্রেসিডেন্টের পাতে ছিল স্মোকড ইলিশ, পেঁয়াজু এবং সমুচা। রুটি আর মাখনের সঙ্গে পরিবেশিত হয় দক্ষিণ ভারতীয় মাল্লিগাতওয়ানি কারি স্যুপ। এছাড়া মেন কোর্সে ছিল খাসির কাচ্চি বিরিয়ানি, গরুর শিক কাবাব, চিকেন কোর্মা, রোস্টেড লবস্টার, টক বেগুনের তরকারি এবং লুচি।
(আরও পড়ুন: জি ২০ সম্মেলনে জোয়ার-বাজরার পদের জয়জয়কার, কী ‘মধু’ আছে জানলে আপনিও খাবেন)
শেষ পাতে পরিবেশন করা হয় পাটিসাপটা পিঠা, মিষ্টি দই, রসগোল্লা ও নানারকম ফল। পানীয়র তালিকায় ছিল পছন্দমাফিক ফলের রস, সফ্ট ড্রিঙ্কস, চা ও কফি। সোমবার ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর। এই সফরে রোহিঙ্গা ইস্যু, নারীর ক্ষমতায়ন, বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
সোমবারই বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট নির্মাণ এবং নগর সরকার ও পরিকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে দুটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের করবী হলে এই দুটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। এই দিন ওই নৈশভোজে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘বিগত বছরগুলিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দেশটির ভূমিকা প্রশংসনীয়।’
এদিন বৈঠকের আগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে যান। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। উল্লেখ্য, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে ২০২১ সালের নভেম্বরে ফ্রান্স সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে এসেছিলেন ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরা। মিতেরার সেই সফরের পর দুই দেশের বাণিজ্য অনেক দূর এগিয়েছে। বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মোট বাণিজ্য ২১০ মিলিয়ন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৪.৯ বিলিয়ন ইউরো হয়েছে।