নাৎসি যুগের বর্বর মানবতাবিরোধী অত্যচার ও হত্যালীলার ঘটনা আজকের পৃথিবীতে কমবেশি সকলেই জানেন। ফের একবার প্রকাশ্যে এক এমনই কোনও হত্যালীলার প্রামাণ্য তথ্য। হাত-পা বিহীন পাঁচটি মানব কঙ্কাল পাওয়া গিয়েছে বর্তমানে পোল্যান্ডে নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারের ইস্ট ফ্রন্ট সামরিক সদর দফতরে লুফটওয়াফে কমান্ডার হারম্যান গোয়েরিং-এর দফতরে। এদের মধ্যে তিনটি কঙ্কাল প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের এবং দুটি শিশুর। ল্যাটেব্রা ফাউন্ডেশন নামক একটি গ্রুপের কয়েকজন অপেশাদার প্রত্নতাত্ত্বিক বেশ কয়েক বছর ধরে সরকারী অনুমতি নিয়ে এই অঞ্চলটিতে খনন করছিলেন, এমনটাই গ্রুপের সদস্যরা এবং কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
লেটেব্রা গ্রুপের সদস্য ডমিনিক মার্কিউইচ রয়টার্সকে বলেন, ‘আপনি কখনই এমন একটি জায়গায় এধরনের জিনিস পাওয়ার আশা করবেন না। এই স্থানটি ছিল থার্ড রাইচের সবচেয়ে সুরক্ষিত জায়গা। যুদ্ধের পরে সোভিয়েত রেড ফৌজ এই জায়গাটি দখল করে নেয়।’ তিনি আরও যোগ করেছেন যে কঙ্কালগুলি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার ছিল নাকি, পরে সেখানে কবর দেওয়া হয়েছিল, তা স্পষ্ট নয়। পোল্যান্ডের সরকারী সংস্থা স্রোকোও ফরেস্ট ডিস্ট্রিক্টের শিক্ষা ও পর্যটন প্রচারের উপপ্রধান সেবাস্তিয়ান ট্রাপিক রয়টার্সকে বলেন, মৃতদেহগুলোকে ভবনের ঠিক নীচে মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকতে দেখা গেছে, যেখানে একসময় কাঠের মেঝে ছিল। এই অঞ্চলের নিকটবর্তী প্রাদেশিক রাজধানী ওলসজটিনের প্রসিকিউটর অফিসের মুখপাত্র ড্যানিয়েল ব্রোডোস্কি জানিয়েছেন, এই বিষয়ে একটি তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ফরেন্সিক তদন্তকারীরা পুলিশ তত্ত্বাবধানে মৃতদেহগুলি পরীক্ষা করেছেন। তিনি বলেন, ‘সবাই ভাবছিল এই স্থানটিতে কী ঘটেছিল...কিন্তু যুক্তিসঙ্গত কিছুই মাথায় আসছিল না’ তিনি বলেন।
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা আদৌ জানতাম না যে আমরা কিসের সঙ্গে মোকাবিলা করছিলাম। থার্ড রাইচে ধর্মান্ধদের কিছু গোপন আচার ছিল কিনা, এই প্রশ্নও আমাদের মাথায় এসেছে। এই বিষয়ে আমাদের কোনও ধারণাই নেই।’ উলভস লায়ার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের পূর্ব ফ্রন্টের সামরিক সদর দফতরের ছিল। ২৫০ হেক্টর এলাকা জুড়ে প্রায় ২০০টি কাঠামো নিয়ে গঠিত ছিল এই উলভস লায়ার। যখন তাঁরা ১৯৪৫ সালের শুরুর দিকে পশ্চাদপসরণ করতে শুরু করে, এই এলাকার দুর্গ, কাঠামোগুলি জার্মান নাৎসি বাহিনী ধ্বংস করে দেয়। কাঠামোগুলি সোভিয়েত রেড আর্মির হাতে যাতে না পড়ে, সেজন্যই এমন ব্যবস্থা করা হয়। সম্প্রতি খুঁজে পাওয়া কঙ্কালগুলি কোন সময়কার, তা প্রমাণের অপেক্ষায় এখন আগ্রহীরা।