শিখদের পাগড়ি ব্যবহারের সঙ্গে মুসলিম মহিলাদের হিজাব ব্যবহারের তুলনা চলে না। হিজাব মামলার শুনানিতে এমনই পর্যববেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। আবেদনের শুনানি চলাকালীন বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে মামলাকারীর আইনজীবী নিজামউদ্দিন পাশা বলেন, এক জন শিখ যখন পাগড়ি পরে স্কুলে যায়, তখন কি তাকে পাগড়ি খুলে স্কুলে ঢুকতে বলা হয়? এর জবাব দেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তা। (আরও পড়ুন: মঞ্চে নেত্রীর ‘ধমক’, সন্ধ্যায় ফেসবুক পোস্টে সরাসরি মমতাকে ‘চ্যালেঞ্জ’ মহুয়ার?)
বৃহস্পতিবার হেমন্ত গুপ্তা বলেন, ‘পাগড়ির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই আদালতের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে যে শিখদের জন্য পাগড়ি এবং কৃপাণ অপরিহার্য। এবং এগুলি দেশের সংস্কৃতিতে সুপ্রতিষ্ঠিত। তাই আমরা বলছি, শিখদের প্রথার সঙ্গে হিজাবের তুলনা করা ঠিক হবে না।’
আরও পড়ুন: 'সবসময় কুটুস কুটুস…', বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে ‘চিড়’ নিয়ে মুখ খুললেন মমতা
এদিকে মামলাকারীর পক্ষে সওয়াল করা অপর এক আইনজীবী অ্যাডভোকেট দেবদত্ত কামাত শুনানি চলাকালীন বলেন, ‘হিজাব পরা অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন কি না সে সম্পর্কে কর্ণাটক, কেরল এবং মাদ্রাজ হাইকোর্টের তরফে ভিন্ন মত পোষণ করা হয়েছে। মাদ্রাজ এবং কেরল আদালত হিজাবকে একটি অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন হিসাবে গণ্য করেছে কিন্তু কর্নাটক হাইকোর্ট তা করেনি।’
প্রসঙ্গত, হিজাব বিতর্ক নিয়ে কর্ণাটক হাই কোর্টের রায়ে অসন্তুষ্ট হয়ে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয়েছিলেন মামলাকারীরা। কর্ণাটক হাই কোর্ট এর আগে রায় দেয়, হিজাব মুসলিমদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। সেই ক্ষেত্রে স্কুল বা কলেজের ইউনিফর্ম মেনেই পড়ুয়াকে শ্রেণিকক্ষে ঢুকতে হবে। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পড়ুয়ারা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি চলছে।
বিগত দিনে এই মামলার শুনানি চলাকালী অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের তরফে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট এর আগে বলে, ‘আপনি যদি কোনও রীতি মানতে চান বা অনুশীলন করতে চান, তাহলে তা অনুশীলন করার ধর্মীয় অধিকার আপনার থাকতেই পারে। হিজাব পরা অপরিহার্য হতেও পারে, আবার এটি অপরিহার্য নাও হতে পারে। একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে আপনি আপনার ধর্মীয় অনুশীলন চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জোর খাটাতে পারেন কি না, সেটাই প্রশ্ন। কারণ আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনায় স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে আমরা ধর্মনিরপেক্ষ দেশ।’