প্রায় ২৫০ বছরে উষ্ণতম জুলাইয়ের সাক্ষী থাকল পৃথিবী। এমনই জানাল মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার গোদার্ড ইনস্টিটিউট অফ স্পেস স্টাডিজ। একই কথা জানিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ সংস্থা। সেই পরিস্থিতিতে আগামিদিনে কী হতে চলেছে, তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আমেরিকার জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যে সময় থেকে তথ্য আছে, সেইসময় থেকে এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সর্বকালের তৃতীয় উষ্ণতম বছর হল ২০২৩ সাল। যা বিশ্বের উষ্ণতম বছরেও পরিণত হতে পারে। সেই সম্ভাবনা আছে ৫০ শতাংশ। আর সর্বকালের উষ্ণতম বছরের প্রথম পাঁচের মধ্যে যে ২০২৩ সাল ঢুকে পড়বে, সেটার সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ বলে জানিয়েছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। তবে সেখানেই শেষ হবে না। জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ২০২৩ সালের থেকেও বেশি গরম পড়বে ২০২৪ সালে।
আরও পড়ুন: রেকর্ড গরম, বাড়ছে হিটস্ট্রোক! কেন হচ্ছে? কোন পথে চলেছে পৃথিবী
প্রায় ২৫০ বছরে উষ্ণতম জুলাই
গোদার্ড ইনস্টিটিউট অফ স্পেস স্টাডিজের তরফে জানানো হয়েছে, ১৮৮০ সালে শেষবার এতটা গরম পড়েছিল কোনও জুলাইয়ে। আর ১৯৫১ সাল থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে জুলাইয়ের গড় তাপমাত্রা বিবেচনা করলে ২০২৩ সালের সপ্তম মাসে গরম বেশি ছিল ১.১৮ ডিগ্রি (গড় তাপমাত্রার থেকে)।
আরও পড়ুন: UK minister in Kolkata- কলকাতায় ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ওপর জোর
রেকর্ড গড়তে পারে ২০২৩ সাল, আরও গরম পড়তে পারে ২০২৪ সালে
সংবাদসংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার আমেরিকার 'ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন'-র প্রধান বিজ্ঞানী সারা কাপনিক জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত বিশ্বের উষ্ণতম বছরের তালিকায় ২০২৩ সাল তৃতীয় স্থানে আছে। এটা কার্যত নিশ্চিত যে বিশ্বের সর্বকালের (যতদিনের তথ্য আছে) উষ্ণতম বছরের তালিকার প্রথম পাঁচে থাকবে ২০২৩ সাল। সেই সম্ভাবনা হল ৯৯ শতাংশ। আর ২০২৩ সালই বছরের উষ্ণতম বছর হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৫০ শতাংশ আছে বলে জানিয়েছেন 'ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন'-র প্রধান বিজ্ঞানী।
আবার গোদার্ড ইনস্টিটিউট অফ স্পেস স্টাডিজের অধিকর্তা আবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে ২০২৩ সালটা স্রেফ ট্রেলার ছিল। 'দুষ্টু ছেলে' এল নিনোর প্রভাবে ২০২৪ সালে আরও গরম পড়তে পারে। তিনি বলেছেন, ‘এল নিনোর সবথেকে মারাত্মক প্রভাব আসলে পড়বে ২০২৪ সালে। তাই আমাদের আশঙ্কা, শুধু ২০২৩ সালে যে খুব গরম থাকবে এবং গরমের নিরিখে রেকর্ড তৈরি হতে পারে, সেটা নয়; ২০২৪ সাল আরও উষ্ণ হবে।’
সেই পরিস্থিতিতে নাসার প্রশাসক বিল নেলসন বলেছেন, 'এটা স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে যে পৃথিবীতে গরম বাড়ছে। আমাদের সতর্কবার্তা পাঠাচ্ছে প্রকৃতি। আর সেই বার্তা হল যে আমাদের এখনই পদক্ষেপ করতে হবে। নাহলে জলবায়ু তথা আমাদের গ্রহকে বাঁচানোর কাজটা খুব দেরি হয়ে যাবে।