শনিবার হিন্দুস্তান টাইমস লিডারশিপ সামিটে রাশিয়া ও পুতিনের বিরুদ্ধে সুর চড়ান ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। ইউক্রেনে পুতিনের সামরিক অভিযান নিয়ে তিনটি ভবিষ্যদ্বাণী করেন বরিস জনসন। তাঁর কথায়, ‘পুতিন হারবেন। রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জাম রফতানির ব্যবসা জোরদার ধাক্কা খাবে। পুতিনের কারণে দুর্বল হবে রাশিয়া এবং শক্তিশালী হবে চিন।’ বরিস বলেন, ‘ভ্লাদিমির পুতিন কীভাবে হার স্বীকার করবেন, সেটা নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে না। পুতিন হলেন মাস্টার অফ প্রোপাগান্ডা। উনি রাশিয়ানদের বুঝিয়ে দেবেন কালো হল সাদা। রাশিয়া হারলে পুতিন দাবি করবেন যে নাৎসিদের গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। পুতিন হয়ত বলবেন যে রাশিয়ার সংস্কৃতিকে রক্ষা করেছেন।’
এদিন জনসন বলেন, ‘যুদ্ধের আগে পুতিন মাত্র একজনের সঙ্গেই পরামর্শ করেছিলেন। বেজিং অলিম্পিকের সময় সেই সংক্রান্ত সবুজ সংকেত পেয়েছিলেন তিনি। আদতে তিনি (ভ্লাদিমির পুতিন) শি জিনপিংয়ের পাঙ্ক (অকর্মণ্য ব্যক্তি)।’ বরিসের কথায়, ‘লোকেরা মনে করে যে ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিতে চাইছিল এবং তাই পুতিন সামরিকভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। এটা বাজে কথা। পুরো ভুয়ো। পুতিন মনেই করেন না যে ইউক্রেন একটি স্বাধীন দেশ। তাঁর লেখা প্রতিবেদনে সেই বিষয়ে তিনি স্পষ্ট ধারণা তুলে ধরেছেন। এই কারণেই তিনি এই যুদ্ধ শুরু করেন।’ পুতিনকে নিয়ে বরিস আরও বলেন, ‘আমার মনে হয় পুতিনের হার নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে না। তিনি নিজে মিথ্যা প্রচারের মাস্টার।’
এদিকে ভারত-ব্রিটিশ সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার বার্তা দিয়ে বরিস বলেন, ‘আমরা এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল জুড়ে যে উত্তেজনা দেখছি এবং দক্ষিণ চিন সাগরে, ইউক্রেন বা তাইওয়ানে যা ঘটছে, এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক এবং যৌথ স্থিতিশীলতার জন্য আমাদের দুই গণতন্ত্রকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’ তিনি টিকা নিয়ে ভারত ও ব্রিটেনের যৌথ প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।
এদিন বরিস বলেন, ‘অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আবিষ্কার করা হয়েছিল অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা। এবং ভারতে পুনাওয়ালার সেরাম ইনস্টিটিউট এত বিপুল সংখ্যক টিকা উৎপাদন করে যে ব্রিটেনেও তা ব্যবহার করা হয়। আমার নিদের রক্তে অ্যাস্ট্রাজেনেকার মশলা রয়েছে। এরপর থেকে আমার আর কোভিড হয়নি।’
বরিস আরও বলেন, ‘এর আগে কোভিড অতিমারি শুরু হওয়ার সময় সবাই বলেছিলেন যে গণতন্ত্রের বদলে একনায়কতান্ত্রিক সরকার বেশি ভালো ভাবে কোভিড নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। চিন যেভাবে তাদের জনগণকে ঘরে বন্দি করেছে তা ঠিক নয়। এখানে দেখুন কীভাবে আমরা সবাই মাস্ক ছাড়া ঘুরে বেরাচ্ছি এবং হাত মেলাচ্ছি। আমরা গণতন্ত্র হিসেবে এই কাজ করে দেখাতে পেরেছি।’