বিগত ৪ দিনে দিল্লিতে করোনায় মৃত্যু হয়েছে মোট ৯৭ জনের। আর এর মধ্যে ৭ জনের বয়স ১৮ বছর বা তার কম। এই ৭ শিশুর মধ্যে তিনজনের বয়স তো একবছরের গণ্ডিও পার করেনি। আর আচমকা করোনায় আক্রান্ত হয়ে শিশু মৃত্যু দেখে অবাক অনেকেই। এদিকে শিশউদের পরিবারের সদস্যরা স্বভাবতই শোকগ্রস্ত, বিহ্বল। তাঁরা জানেন না যে কীভাবে তাঁদের শিশুর শরীরে এই ভাইরাস ঢোকে।
জানা গিয়েছে মৃতদের মধ্যে একটি শিশুর বয়স এক মাস। অপর এক শিশুর বয়স তিন মাস এবং তৃতীয় সদ্যোজাতের বয়স সাত মাস। মনে করা হচ্ছে ইমিউনিটি কম থাকার কারণেই এই শিশুদের শরীরে করোনাভাইরাস প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর সঙ্গে কথা বলেন এক মৃত শিশুর বাবা। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের জন্মের সময় ডাক্তাররা বলেছিলেন যে তার পেটে নোংরা জল চলে গিয়েছে। সেই সময় ভিতরে ভিতরে তার রক্তক্ষরণ হয়েছিল। ডাক্তাররা তার চিকিত্সা করে তাকে সারিয়ে তুলেছিলেন। তবে তাঁরা বলেছিলেন যে আমার সন্তানের ইমিনউনিটি কম। আর তাই সে করোনা আক্রান্ত হয়।’
এদিকে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হওয়া সাতবছর বয়সী শিশুটির থ্যালাসেমিয়া ছিল বলে জানা গিয়েছে। সেই শিশুর বাবা করোনা আক্রান্ত হয়। সেদিনই তার সন্তানেরও পরীক্ষা করা হলে তার রেজাল্ট পজিটিভ আসে। সাত মাসের এই শিশুর জন্ম হয়েছিল কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়। এই আবহে জাক্তাররা জানান যে সাত মাসের শিশুটির করোনার পাশাপাশি নিউমোনিয়া ও হার্টের সমস্যাও দেখা দেয়। এতে ইমিউনিটি আরও কমে যায় সেই শিশুর। শেষ পর্যন্ত নেই কোভিডই শিশুটির প্রাণ কেড়ে নেয়।
এদিকে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারানো তিন মাসের শিশুটিরও হৃদযন্ত্রে সমস্যা ছিল। শিশুটির হৃদয়ে ফুটো ছিল বলে জানা গিয়েছে। হৃদরোগের জন্য হাজপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল শিশুটিকে। হাসপাতালে ভর্তির সময় তার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ ছিল। তবে হাসপাতালে থাকাকালীন তার করোনা পরীক্ষা তরা হলে দেখা যায় তার শরীরে ভাইরাস ঢুকে গিয়েছে। পরে হৃদযন্ত্রে সমস্যা থাকা শিশুটিকে আর বাঁচানো যায়নি।
এদিকে ১৮ বছরের ছোট শিশু ছাড়াও গত ৪ দিনে দিল্লিতে করোনার বলি হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মধ্যবয়স্ক ও বৃদ্ধরাও। জানা গিয়েছ, গত ৪ দিনে ১৯ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে ১৮ জন, ৪১ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের মধ্যে ৩৭ জন এবং ষাটোর্ধ্বদের আটজন মারা গিয়েছ করোনা আক্রান্ত হয়ে। মৃতদের মধ্যে ৭০ জনই টিকা নেয়নি।