মানুষের তৈরি মহাকাশযান সৌরজগত ত্যাগ করেছে৷ সৌরজগতের বাইরে অসংখ্য গ্রহ আবিষ্কার করা যাচ্ছে৷ অথচ প্লুটোর মর্যাদাহানির পর নবম গ্রহের অস্তিত্বের আভাস পেলেও সেটি এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ সৌরজগতে কি একটি নবম গ্রহ রয়েছে এবং থাকলে সেটি কীভাবে খুঁজে পাওয়া সম্ভব?
মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সির অসংখ্য সৌরজগতের মধ্যে আমাদেরটিও অন্যতম৷ এর মধ্যে চারটি পাথুরে গ্রহ রয়েছে৷ চারটি গ্রহের আবার শক্ত উপরিভাগ নেই৷ বুধ, শুক্র, পৃথিবী ও মঙ্গলগ্রহ কাছ থেকেই সূর্য প্রদক্ষিণ করে চলেছে৷ গ্যাসভরা গ্রহগুলির তুলনায় আকারে সেগুলি ছোট৷ অন্যদিকে গ্যাসভরা গ্রহ হিসেবে বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন সূর্য থেকে অনেক দূরে রয়েছে৷
দৈত্যাকার নীল গ্রহ নেপচুন পৃথিবীর তুলনায় সূর্য থেকে ৩০ গুণ দূরে বিচরণ করছে৷ নেপচুনের কক্ষপথের বাইরে তথাকথিত কুইপার বেল্টের মধ্যে বরফের মতো মহাজাগতিক বস্তু ভেসে বেড়াচ্ছে৷ সেখান থেকে আরও অনেক দূরে আনুমানিক এই গ্রহ রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ সেটি নবম গ্রহ বলে বিজ্ঞানীরা এটিকে ‘প্ল্যানেট নাইন' নামে ডাকছেন৷ এমন গ্রহের অস্তিত্ব অনুমান করার পেছনে কারণ রয়েছে৷
কুইপার বেল্টের মধ্যে কিছু মহাজাগতিক বস্তুর কক্ষপথ বেশ উপবৃত্তাকার ও বাঁকা৷ আশেপাশে অন্য কোনও বড় বস্তুর টানে এমনটা ঘটছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন৷ মনে রাখতে হবে, আমাদের সৌরজগতের পরিচিত আটটি গ্রহ কিন্তু বৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্য প্রদক্ষিণ করে৷
আনুমানিক এই ‘প্ল্যানেট নাইন' কীভাবে ও কোথায় সূর্য প্রদক্ষিণ করতে পারে, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তা ইতোমধ্যেই পরীক্ষা করে দেখেছেন৷ সেই লক্ষ্যে তাঁরা কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমে আমাদের সৌরজগতের অকল্পনীয় দূরের অংশ চাক্ষুষ করে তুলেছেন৷ সেই হিসেবের মধ্যে বিভিন্ন আয়তন ও কক্ষপথের মহাজাগতিক বস্তুও বিবেচনা করা হয়েছে৷ যাবতীয় তথ্যের ভিত্তিতে আনুমানিক গ্রহের কক্ষপথ আঁকা হয়েছে৷
বিজ্ঞানীদের মতে, ‘প্ল্যানেট নাইন' নেপচুনের তুলনায় সূর্য থেকে ২০ গুণ দূরে বিচরণ করছে৷ সেটির ওজন পৃথিবীর তুলনায় দশ গুণ বেশি৷ সূর্যের আলো সেখানে পৌঁছতে চার দিন সময় নেয়৷ সে কারণে আনুমানিক এই গ্রহের সন্ধান করা আরও কঠিন৷ এমন দূরত্বে কোনও গ্রহ থাকলে সেটি খুব অল্প আলোর প্রতিফলন ঘটাবে৷
হাবল টেলিস্কোপ অন্য এক সৌরজগতে একটি গ্রহ চিহ্নিত করতে পেরেছিল৷ সেটিও ‘প্ল্যানেট নাইন'-এর মতো প্রায় একই দূরত্বে জোড়া নক্ষত্র প্রদক্ষিণ করে চলেছে৷ সেটি পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা আনুমানিক নবম গ্রহ সম্পর্কে নতুন জ্ঞান অর্জন করতে চান৷